প্রতীকী ছবি।
ভুয়ো জন্ম শংসাপত্র জোগাড় করাই শুধু নয়, আধার কার্ড তৈরির সময় বয়সের তথ্য ভুল দেওয়া হয়েছিল। বীরভূমের রাজনগরে এ ভাবেই নাবালিকা মেয়ের বিয়ের চেষ্টা করেছিল তার পরিবার। সে সব নথি দিয়ে আবেদন করা হয়েছিল রূপশ্রী প্রকল্পেও। কারণ, ওই প্রকল্পে এককালীন টাকা পাওয়া যায়। এই প্রবণতা সামনে আসায় চিন্তায় প্রশাসন।
ওই নাবালিকার নথিপত্র যাচাই করতে গিয়েই সন্দেহ হয় প্রশাসনের। পুলিশ ও চাইল্ড লাইন সূত্রে খবর, রূপশ্রীর আবেদনপত্রে থাকা মেয়েটির ছবির সঙ্গে উল্লেখিত বয়সের পার্থক্য চোখে পড়েছিল ব্লকের সরকারি আধিকারিকদের। আধার কার্ড অনুযায়ী মেয়েটির বয়স ছিল ১৯ বছর। সন্দেহ হওয়ায় ওই প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানেন, ওই মেয়েটি রাজনগর স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। শুধু তাই নয়, কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা-প্রাপকদের তালিকাতেও তার নাম রয়েছে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, স্কুলের নথিতে মেয়েটির বয়স ১৫ বছর।
এর পরেই খবর পাঠানো হয় চাইল্ড লাইনে। বুধবার সকালে প্রশাসনের আধিকারিক, রাজনগর থানার পুলিশ এবং চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধিরা ওই নাবালিকার বাড়িতে যান। জানা যায়, ১২ নভেম্বর রাজনগরেরই অন্য এক গ্রামের ছেলের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল। সরকারি আধিকারিকদের সামনে মেয়েটির পরিবার ভুল স্বীকার করে। ভুয়ো নথির বিষয়ে চাইল্ড লাইনের তরফে থানায় একটি জেনারেল ডায়েরি করা হয়েছে। ওই সংস্থা সূত্রে খবর, ৫ নভেম্বর শিশুকল্যাণ কমিটির সামনে ওই নাবালিকা ও তার পরিবারকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভুয়ো ওই জন্ম শংসাপত্র কোথা থেকে পাওয়া গেল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। আধার কার্ড তৈরির সময় ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল বলেই প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। রূপশ্রী প্রকল্পে দরিদ্র পরিবারের মেয়ের বিয়ের জন্য এককালীন ২৫ হাজার টাকা সাহায্য করে রাজ্য সরকার। ২০১৮ সালে জানুয়ারি মাসে ওই প্রকল্প শুরু হয়। চাইল্ড লাইনের সদস্য মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা অনেক নাবালিকার বিয়ে আটকেছি। কিন্তু, রাজনগরে যা অভিজ্ঞতা হল, তা অন্য কোথাও হয়নি। এ ভাবে ভুল তথ্য দিয়ে সরকারি প্রকল্পের টাকা নেওয়া এবং তা দিয়ে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা আমাদের কাছে নতুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy