Advertisement
০৭ অক্টোবর ২০২৪

প্রভাবশালীদের নাম না বলতে হুমকি পুলিশের, কোর্টে সরব কুণাল

এ বার আদালতে দাঁড়িয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনলেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ বুধবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতের বিচারক বরুণ রায়ের এজলাসে দাঁড়িয়ে দাবি করেন, সারদা কেলেঙ্কারিতে তিনি যাতে কোনও প্রভাবশালীর নাম না বলেন, সেই জন্য গত ৩০ জুন বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশের একাংশ বিধাননগর কোর্ট লকআপের ভিতরে ঢুকে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৫ ২০:১২
Share: Save:

এ বার আদালতে দাঁড়িয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনলেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ বুধবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতের বিচারক বরুণ রায়ের এজলাসে দাঁড়িয়ে দাবি করেন, সারদা কেলেঙ্কারিতে তিনি যাতে কোনও প্রভাবশালীর নাম না বলেন, সেই জন্য গত ৩০ জুন বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশের একাংশ বিধাননগর কোর্ট লকআপের ভিতরে ঢুকে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন। কুণালের এই অভিযোগকে অবশ্য ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশকর্তারা।
গত ৩০ জুন বিধাননগর কোর্টে কুণাল ঘোষের হাজিরা ছিল। কুণাল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করতেই তাঁকে কার্যত হিঁচড়ে-টেনে লিফটে তোলা হয়। কুণালের অভিযোগ ছিল, বিধাননগরের পুলিশ তাঁর বুকে-পেটে লাথি মেরেছে। সে দিন কোর্টে উপস্থিত পুলিশকর্মীদের অনেকেই সেই অভিযোগের সত্যতা স্বীকারও করেন।
সেই প্রসঙ্গ টেনেই এ দিন কলকাতার নগর দায়রা আদালতে কুণাল মন্তব্য করেন, ‘‘পুলিশের হাতে মার খেতে খেতেই আমি প্রমাণ করছি যে আমি প্রভাবশালী নই।’’
২০১৩-র ২৩ নভেম্বর বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশই কুণালকে সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে। পরে সিবিআইয়ের হাতে এই তদন্ত যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারাও কয়েক দফায় কুণালকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করেছেন।

কুণাল ইতিমধ্যেই একাধিক বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ শাসক দল ও রাজ্য সরকারের বহু প্রভাবশালীর বিরুদ্ধেই সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, শাসক দল ও সরকারকে বিড়ম্বনার হাত থেকে বাঁচাতেই কুণালের মুখ বন্ধে ‘দমদম দাওয়াই’ কিংবা ‘হা-রে-রে’ করে আওয়াজ দিতে কসুর করা হয় না।

এ দিন অবশ্য লালবাজার বুঝেছিল, সর্বসমক্ষে কুণালের মুখ আটকাতে গেলে বিড়ম্বনা আরও বাড়বে। খোদ বিচারকও এ দিন পুলিশকে ডেকে নির্দেশ দেন, কুণালকে যেন হেনস্থা না করা হয়। তাই আদালত থেকে ‘চোরাপথে’ কুণালকে প্রেসিডেন্সি জেলে পাঠানো হয়েছে। অর্থাৎ, সংবাদমাধ্যমের নজর এড়াতে নগর দায়রা আদালতে পিছনের রাস্তা দিয়ে কুণালকে নিয়ে জেলে রওনা দেয় পুলিশ ভ্যান।

আদালতে কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী এ দিন জানান, তাঁর মক্কেলের হাতে ব্যথা ও কিডনিতে পাথর রয়েছে। কিন্তু তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত যে রিপোর্ট জেল কর্তৃপক্ষ দিচ্ছেন তাতে কোনও কিছু স্পষ্ট জানা যাচ্ছে না। হাসপাতালে কী কী চিকিৎসা হচ্ছে, তা-ও নির্দিষ্ট করে জানানো হচ্ছে না। চিকিৎসায় গাফিলতিও থাকছে। অয়নও এ দিন পুলিশের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কোর্ট লক-আপে মক্কেলের সঙ্গে দেখা করতে গেলে দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে।’’

এ দিন কলকাতার নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয়েছিল সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন এবং সংস্থার আর এক ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কেও। দেবযানীর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা তাঁর মক্কেলের জামিনের আর্জি জানান। তবে কুণাল-সুদীপ্ত-দেবযানী তিন জনেরই জামিনের আর্জি খারিজ করে ২০ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE