গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
গুজব ছড়াল এ বার হাওড়ার টিকিয়াপাড়ায়। আর তারই জেরে গণপিটুনির শিকার হলেন এক মহিলা। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে বুধবার প্রায় সারা রাত ধরেই রণক্ষেত্রের চেহারা নিল টিকিয়াপাড়া।পুলিশ লাঠিচার্জ করে, কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে উত্তেজিত জনতাকে। নামানো হয় কমব্যাট ফোর্স।
মঙ্গলবার টিকিয়াপাড়া এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, ওই দিন এক মহিলা নাকি কসমেটিকস্ বিক্রির অছিলায় এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ঘরে ঢুকে তার উপর চড়াও হয়। ছুরি দিয়ে জখম করে তাকে। যদিও এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের জানা নেই। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে দ্রুত এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে। সোশ্যাল মিডিয়ায়, হোয়াটঅ্যাপে এলাকার বহু মানুষের কাছে পৌঁছে যায় গুজবটি।
পুলিশ জানিয়েছে, এর পর বুধবার রাতে এলাকায় এক অচেনা মহিলাকে ঘুরে বেড়াতে দেখেই সাধারণ মানুষের সন্দেহ হয়। তাঁর উপর চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর গুজব ছড়ানো হচ্ছে রাজ্যের কিছু জায়গায়, সতর্ক থাকুন, এ সবই মিথ্যে
আরও পড়ুন: ‘দেশভক্ত’দের বেধড়ক মারে রক্তাক্ত, তবু বাংলা ছাড়বেন না কাশ্মীরের শাল বিক্রেতা জাভেদ
ঘটনাস্থল থেকে টিকিয়াপাড়া থানা কাছেই। খবর পাওয়া মাত্র ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুলিশ কর্মীরা। মহিলা উদ্ধার করতে গেলে উত্তেজিত জনতা তাঁদের উপরও চড়াও হন। পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর চালাতে শুরু করেন তাঁরা। পরিস্থিতি ক্রমশ হাতের বাইরে যাচ্ছে বুঝে আশেপাশের থানাতেও খবর দেয় টিকিয়াপাড়া থানা। আশেপাশের ৫টি থানার পুলিশ ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। উত্তেজিত জনতার উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়, নামানো হয় কমব্যাট ফোর্সও।
আরও পড়ুন: মোদী ঘনিষ্ঠ আদানি গ্রুপের হাসপাতালে ৫ বছরে ১০০০ শিশুর মৃত্যু! বলছে সরকারি
গুজবের জেরে গলপিটুনির ঘটনা নতুন নয়। শুরুটা হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগণা থেকে। কখনও ছেলেধরা, কখনও কিডনি পাচারকারী বা চোর— এমনই নানা গুজবকে কেন্দ্র করে ওই জেলার বিভিন্ন এলাকায় অপরিচিতদের মারধর করা হচ্ছিল। সম্প্রতি সেই গুজবে সংক্রামিত হয়ে যায় এ রাজ্যের অন্যান্য জেলাও। হাওড়া জেলা পুলিশ সোমবার বিকেল থেকে গুজবের বিরুদ্ধে জেলা জুড়ে শুরু মাইক-প্রচার শুরু করে। হ্যান্ডবিল, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপেও চলছে প্রচার। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে। কিন্তু তাতে এখনও গুজবের জেরে এলাকায় এলাকায় আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা বন্ধ হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy