মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সরকারি জমি বেহাত হওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্যের আমলা-পুলিশদের। এ বার বেহাত হওয়া সরকারি জমি ফেরাতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য পুলিশ। নবান্ন সূত্রে খবর, সরকারি জমি বেআইনি ভাবে দখল হয়ে থাকলে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য পুলিশ। বৃহস্পতিবার নবান্নে সমস্ত পুরসভার মেয়র, সমস্ত দফতরের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, জেলাশাসক এবং পুলিশকর্তাদের বৈঠকে ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের বেশির ভাগই ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দিয়েছিলেন বৈঠকে। নবান্ন সূত্রের খবর, বৈঠকে ভূমি দফতরের কর্তাদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশ্ন তুলেছেন, কী ভাবে সরকারি জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে? পুলিশ কেন বিষয়টি দেখছে না?
মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের পর ভবানী ভবনে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা। সেই বৈঠকেই ঠিক হয়, কোন কোন জেলায় সরকারি জমি দখল করে রাখা হয়েছে, তার তালিকা তৈরি করতে বলা হবে থানাগুলিকে। সেই তালিকার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট এলাকা খালি করবে পুলিশ। নবান্ন সূত্রে খবর, শুক্রবার ভবানী ভবনে সমস্ত জেলার পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর এমনই নির্দেশ জেলা স্তরের পুলিশ প্রশাসনে। থানাগুলি নিজেদের এলাকায় নজরদারি চালিয়ে বেহাত হওয়া সরকারি জমি চিহ্নিত করবে। সেই জমি চিহ্নিত করার পর রিপোর্ট আকারে তা যাবে জেলা পুলিশ সুপারের দফতরে। সেখান থেকে রিপোর্ট পাঠানো হবে রাজ্য পুলিশের কাছে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে নিচু তলায় জমি উদ্ধারের কাজ শুরু করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পর এ বিষয়ে আরও দ্রুত কাজ শুরু করতে চাইছে রাজ্য পুলিশ প্রশাসন। তাই তড়িঘড়ি বৈঠক দেখে চলতি সপ্তাহ থেকেই এই কাজে নামতে থানাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যদিও বৈঠক প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি রাজ্য পুলিশের কোনও শীর্ষকর্তাই। আপাতত আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বেআইনি জমি উদ্ধার করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সে বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করতে চায় রাজ্য পুলিশ। যে হেতু রাজ্যের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের মন্ত্রী স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী, তাই মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন রাজ্য পুলিশের বড়কর্তারা। কয়েক মাস আগে জেলা স্তরের এক প্রশাসনিক বৈঠকে ভূমি দফতরের কাজ নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চ থেকে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, নিচু তলার কিছু সরকারি কর্মীও এ সবের সঙ্গে যুক্ত। ‘ঘুঘুর বাসা’ ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। নবান্ন সূত্রের খবর, সম্প্রতি জেলাভিত্তিক রিপোর্ট জমা পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। নবান্নের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘জেলায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়িত হয়নি। বদলায়নি পরিস্থিতিও। সে কারণেই তিনি ক্ষুব্ধ।’’ প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, কলকাতা শহরেও সরকারি জমি বেহাত হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে খবর রয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গয়ালকেও মুখ্যমন্ত্রী খানিক তিরস্কার করেছেন বলেই প্রশাসনিক সূত্রের দাবি। তাই কলকাতা শহরে বেআইনি ভাবে দখল করা সরকারি জমির উদ্ধারে একযোগে নামতে চায় কলকাতা পুরসভা ও কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যে মেয়র ফিরহাদ হাকিম এই বিষয়ে কলকাতা পুরসভার ভূমি বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেই সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy