Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Rabindranath Tagore

Rabindranath Tagore: রবীন্দ্রমূর্তির মাথায় জুতোর বিজ্ঞাপন! দুর্গাপুরের ছবি ঘিরে নেটমাধ্যমে আলোড়ন

পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের সামনে ওই জুতোর বিজ্ঞাপনটি নিয়ে রবিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে প্রতিবাদ বিক্ষোভ।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তির ওপর জুতোর বিজ্ঞাপন

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তির ওপর জুতোর বিজ্ঞাপন নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২১ ০০:০০
Share: Save:

নীচে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি। আর তার ঠিক উপরেই বিশাল বিজ্ঞাপনের প্ল্যাকার্ডে ঢাউস জুতোর ছবি। পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের সামনে ওই জুতোর বিজ্ঞাপনটি নিয়ে রবিবার সকাল থেকেই শুরু হয়েছে প্রতিবাদ বিক্ষোভ। নেটমাধ্যমে ঘটনাটির নিন্দা করেছেন রবীন্দ্র অনুরাগীরা। প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখিয়েছে বাঙালি সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠন বাংলা পক্ষও। রবিবার, ২২ শ্রাবণ, ওই বিজ্ঞাপনটির প্রতিবাদ জানাতে তারা দুর্গাপুরের রবীন্দ্রনাথের মূর্তিটিকে গঙ্গাজলে স্নান করিয়েছে। এমনকি এই বিজ্ঞাপন নিয়ে বুদ্ধিজিবীরা এখনও কোনও প্রতিবাদ জানাননি কেন সেই প্রশ্নও তুলেছে সংগঠনটি। যদিও স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, বিজ্ঞাপনটি নতুন নয়। রবীন্দ্রনাথের মূর্তির উপর বহুদিন ধরেই রয়েছে। তবে এ নিয়ে প্রতিবাদকারীদের টনক নড়েছে রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবসেই।

রবিবার ছিল বিশ্বকবির প্রয়াণ দিবস। সকাল থেকেই দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের সামনে রবীন্দ্র মূর্তির মাথার উপরের ওই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বাংলা পক্ষ। পরে সংগঠনের শীর্ষ পরিষদের সদস্য তথা চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, "এটা ন্যক্কারজনক ঘটনা। সংস্কৃতি কোথায় গিয়ে ঠেকছে এটা তার প্রমাণ। রবীন্দ্র চেতনা হারিয়ে গিয়েছে, এই ঘটনায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। না হলে এই দৃশ্য দেখে খারাপ লাগল না?’’ বাংলা পক্ষের প্রতিবাদের পর অবশ্য ওই বিজ্ঞাপনটিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান অরিন্দম। তিনি বলেন, ‘‘আজ তো ওই মূর্তিতে মালাও দেওয়া হয়েছে শুনলাম। বাংলা পক্ষ এর প্রতিবাদ করায় ওই বিজ্ঞাপন সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও শুনেছি।"

বিতর্কিত জুতোর বিজ্ঞাপনটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপিও। স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্ণণ ঘড়ুইয়ের অভিযোগ, মূর্তিটির পাশে একটি প্রস্রাবগার এবং একটি রেস্তরাঁ আছে। তাঁর যুক্তি, ‘‘মূর্তির পাশেই রেস্তরাঁ থাকায় সামনে রেস্তরাঁর উচ্ছিস্ট ফেলা হয়। প্রস্রাবগারের অবস্থানটিও উপযুক্ত নয়। এসবের পরেও কোন বুদ্ধিজীবীকে রাস্তায় নেমে এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে দেখা গেল না। স্থানীয় প্রশাসনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’ বদলে তৃণমূল ত্রিপুরায় ‘‘নাটক করতে গিয়েছে’’ বলেও মন্তব্য করেন বিজেপির ওই বিধায়ক।

মূর্তির অবস্থান যে যথাযথ নয় তা মেনে নিয়েছে তৃণমূলও। তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘যারা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে অবমাননা করছেন তাদের জানা উচিত এভাবে হোডিং দেওয়া অন্যায়। এভাবে খাবার ফেলা বা প্রসাব করা উচিত নয়। যে জায়গায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি লাগানো আছে সে জায়গাটা ঠিক নয়। সেখান থেকে তুলে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে হবে।’’ তবে বিজেপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তাপসের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘এ নিয়ে নাটক করে কোনও লাভ নেই। যে জায়গায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি রয়েছে সে জায়গাটি প্রপার জায়গা নয়। যদি তারা চায় মূর্তি অন্যত্র নিয়ে যেতে পারে। আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ ভালো জায়গা দিয়ে দেবে। যদি বিজেপি মনে করে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভালো মূর্তিও লাগাতে পারে। কিন্তু এ নিয়ে নাটক অনর্থক।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য জানিয়েছেন, বিজ্ঞাপনটি ওই চত্বরে রবীন্দ্রনাথের মূর্তির মাথায় দীর্ঘদিন ধরেই ছিল। রবিবার কবিগুরুর প্রয়াণ দিবসের সকালেই এ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Rabindranath Tagore Bardhaman Advertisement
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE