ধূপগুড়িতে সিপিএম প্রার্থীর প্রচারে তীব্র তৃণমূল বিরোধিতা অধীর চৌধুরীর। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
বাংলায় ‘ইন্ডিয়া’র লাইনে চলবে না কংগ্রেস, শুক্রবার সে কথা আরও একবার যেন স্পষ্ট করে দিতে চাইলেন প্রদেশ সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। মুম্বইয়ে শুক্রবার দুপুরেই শেষ হয়েছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র তৃতীয় বৈঠক। তার পর সাংবাদিক সম্মেলনে প্রত্যয়ের সঙ্গে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘‘সবাই মিলে যদি একসঙ্গে লড়াই করা যায়, রাজ্যে রাজ্যে যদি জোট বাঁধা যায়, তা হলে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বিজেপি হারবে।’’ প্রায় একই সময়ে মুম্বই থেকে দু’হাজার ২০০ কিলোমিটার দূরে ধূপগুড়িতে দাঁড়িয়ে বিজেপি ও তৃণমূলকে এক বন্ধনীতে ফেলে আক্রমণ শানালেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর। একই মঞ্চ থেকে তৃণমূল ও বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ শানালেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমও।
ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে সিপিএম প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়েছিলেন অধীর। বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ বলেন, ‘‘সারা দেশে লুট করছে মোদীর বিজেপি। আর রাজ্যে লুট করছে দিদির তৃণমূল।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বিধানসভায় এখন শুধু বিজেপির সাম্প্রদায়িকতা আর তৃণমূলের সন্ত্রাস। এই দুই শ্বাপদের দলকে হারান। সন্ত্রাস আর সাম্প্রদায়িকতার মাঝে প্রগতিশীল নিশ্বাস ফেলার সুযোগ দিন।’’
বেঙ্গালুরুতে ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকের পরে অধীর বলেছিলেন, বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদের কোনও সমঝোতা হবে না। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ আগে সেই অধীরই একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘পুকুর এবং নদীর মধ্যে ফারাক আছে। আমার কাছে বাংলা হল পুকুর। আর ভারত হল নদী। আমি যেটা বলতে চাই, সেটাই বলি। পিছন থেকে কথা বলি না।” তিনি জাতীয় স্বার্থের কথা উল্লেখ করে বলেছিলেন, তাঁদের এখন পুকুরের কথা ছেড়ে নদীর কথা ভাবতে হবে। যা নিয়ে বিস্তর জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ধূপগুড়ির মতো ‘পুকুরের’ ভোটে বাংলা লাইনেই হাঁটতে চাইলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
অধীর আরও বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজবংশীদের অপমান করেছেন। আমি আপনাকে একটা কথা বলি দিদিভাই। সবাই আপনার ঘরের ভাইপো হয়ে জন্মায় না, আপনার বাড়ির খোকাবাবু হয় না। কাউকে খেতে না দিতে পারেন, কিন্তু অপমান করবেন না।’’ সম্প্রতি মমতার একটি মন্তব্য ঘিরে রাজবংশীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবিও উঠেছিল। তার পর মমতা ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, তাঁর কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। এই ধূপগুড়ি আসনটিও রাজবংশী অধ্যুষিত। তৃণমূল, সিপিএম, বিজেপি— সব দলই রাজবংশী প্রার্থী দিয়েছে। অনেকের মতে সেই ধূপগুড়িতে কৌশলে মমতার বিতর্কিত মন্তব্যের কথা খুঁচিয়ে দিতে চেয়েছেন অধীর।
অধীরের থেকেও চড়া সুরে দুই ফুলকে বেঁধেন সেলিম। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের দাবি, চাকরি চুরির সব কথা মমতা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানতেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যদি পার্থ (চট্টোপাধ্যায়) জেলে যায় তা হলে পিসি-ভাইপো জেলে যাবে না কেন।’’ বুধবার সকালে দিল্লিতে রাহুলের সঙ্গে অভিষেকের বৈঠক নিয়ে বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও টিপ্পনী করেন সেলিম। তাঁর কথায়, ‘‘ভাইপো এখন দেখছে আইনে পারছে না। তাই দিল্লিতে কাকভোরে লাইন করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও লাইন করেই তিনি বাঁচতে পারবেন না।’’ ঘটনাচক্রে সেলিম যখন এই কথা বলছেন, তার কিছু ক্ষণ আগেই মমতার সঙ্গে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির ছবি চলে এসেছে প্রকাশ্যে।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ধূপগুড়িতে জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু বিধায়ক মনোরঞ্জন রায়ের মৃত্যুতে সেখানে উপনির্বাচন হচ্ছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ। ৮ তারিখ গণনা। বৃহস্পতিবার ধূপগুড়িতে বিজেপির প্রচারে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার যাওয়ার কথা অভিষেকের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy