Advertisement
E-Paper

মমতা-সনিয়াদের জোটের মোকাবিলায় ‘এক দেশে এক ভোট’ নীতি চান মোদী! অঙ্ক কষেই পদক্ষেপ পদ্মের

গোটা দেশে একসঙ্গে ভোট। লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই সব রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন। নীতি পুরনো হলেও নতুন উদ্যোগ বিজেপির। তবে খুব সহজে কি এই নীতি চালু করতে পারবে মোদীর সরকার?

জোট মোকাবিলায় পরিকল্পনা!

জোট মোকাবিলায় পরিকল্পনা! ছবি: পিটিআই।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:২৬
Share
Save

বিজেপি-বিরোধী জোটের তৃতীয় বৈঠকের দিনেই ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি চালু করার পদক্ষেপ কেন্দ্রের। তবে কি লোকসভা নির্বাচনে নতুন জোটের মোকাবিলা করতেই পুরনো নীতিকে সামনে নিয়ে আসতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার? এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিরোধী শিবিরের পক্ষ থেকে।

জোট মোকাবিলায় এই নীতি খুবই কার্যকর হবে বলে দাবি করছেন রাজ্য বিজেপির নেতারাও। বাংলার উদাহরণ টেনেই তাঁরা বলছেন, রাজ্যে বিধানসভার প্রচারে বাম-কংগ্রেসের বিরোধিতা এবং লোকসভার ক্ষেত্রে একই দলের সঙ্গে জোটের কথা তৃণমূল বলবে কী করে? একই সমস্যায় পড়বে কংগ্রেস এবং বামেরাও। শুধু এই রাজ্যেই নয়, ‘ইন্ডিয়া’র শরিকরা সব রাজ্যেই এই সমস্যার মুখোমুখি হবে প্রচারে। অন্য দিকে, একটা কথা বলে বিজেপি ভোট চাইতে পারবে। কারণ, দলের সাম্প্রতিক পরম্পরা অনুযায়ী লোকসভা ভোট তো বটেই, যে কোনও রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদীই দলের একমাত্র মুখ।

‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতি বিজেপির পুরনো লক্ষ্য। ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে ছিল সে কথা। অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়েও এ নিয়ে তিনি উদ্যোগী হয়েছিলেন। তবে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে যে এমন পথ নেওয়া হতে পারে তেমন ইঙ্গিত প্রধানমন্ত্রী মোদী দিয়ে রেখেছিলেন ২০১৯ সালের স্বাধীনতা দিবসের ভাষণেই। লালকেল্লা থেকে উস্কে দিয়েছিলেন এক দেশ, এক ভোটের কথা।

কিন্তু বিজেপি ইদানীং সে ভাবে এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়নি। জল্পনা শুরু হয় বৃহস্পতিবার আচমকা সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার পরে। আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পাঁচ দিনের জন্য সংসদ কেন বসবে তা নিয়ে জল্পনায় নানা কথা বললেও বিজেপি নেতারা প্রথম দিকে বুঝতে পারেননি, শুক্রবার সকালেই ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকরের লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করা হবে। এবং তার প্রধান করা হবে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে। তার পরে পরেই বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা চলে যাবেন কোবিন্দের কাছে। শুক্রবার সকালেই বিজেপি সাংসদেরা মনে করছিলেন পুরনো ভবন ছেড়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে নতুন সংসদ ভবনে যাওয়ার জন্যই এই বিশেষ অধিবেশন।

কিন্তু পরে সকলেই বুঝতে পারেন আসল লক্ষ্য, ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি কার্যকরের মাধ্যমে লোকসভার সঙ্গে দেশের সব রাজ্যের বিধানসভা ভোট করে নেওয়া। কিন্তু এর জন্য সংবিধান সংশোধন দরকার। আবার দেশের অর্ধেক রাজ্যের বিধানসভা থেকেও এই নীতির পক্ষে বিল পাশ করাতে হবে। সেই সব অঙ্ক কষেই নাকি মোদীর দল এমন পদক্ষেপ করেছে। বলছেন বিজেপি নেতারাই। তাঁদের বক্তব্য, সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ করাতে সংসদের উভয় কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট পেতে হবে। লোকসভায় শরিক দল মিলিয়ে বিজেপির সাংসদ সংখ্যা এখন ৩৩৩। মোট ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৬৭ শতাংশ ভোট চাই। রয়েছে ৬১ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশের ব্যবস্থা দল করতে পারবে বলেই হিসাব। কঠিন হবে রাজ্যসভা। উচ্চকক্ষে ২৪৫ আসনের মধ্যে বিজেপির হাতে রয়েছে ৩৮ শতাংশ। ফলে তার জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। তবে রাজ্যওয়াড়ি সমর্থন নিয়ে ততটা চিন্তা নেই। কারণ, দরকার ১৫টি রাজ্যের সমর্থন। শরিক দল মিলিয়ে বিজেপির হাতে রয়েছে দেশের ১৫টি বিধানসভা।

তবে রাজ্যসভায় খুবই বেগ পেতে হবে এই বিল পাশ করাতে। নিয়ম অনুযায়ী, ভোটাভুটির দিন উপস্থিত সাংসদ সংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ ভোট দরকার। দেশের স্বার্থের কথা বুঝিয়ে কোনও কোনও দলকে নিজেদের পক্ষে টানতে পারলেও সমস্যার সমাধান হবে না। কোনও রাজনৈতিক দল নিজেদের সাংসদের উপরে উপস্থিতির জন্য হুইপ জারি করে দিলে লড়াই কঠিনতর হবে।

আরও একটি অঙ্ক রয়েছে বিজেপির। যদি এখনই ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি না-আনা যায় তবে এটাই হয়ে উঠবে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে অন্যতম হাতিয়ার। এই নীতির পক্ষে প্রধান যুক্তি হল, সরকারের খরচ কমানো। আরও দু’টি যুক্তি রয়েছে। সরকারি কর্মীদের এক বার নিয়োগ করেই নির্বাচন পর্ব মিটিয়ে ফেলা যাবে। প্রতি বছর দেশের কোথাও না কোথাও ভোট করার চাপ থাকবে না নির্বাচন কমিশনের উপরে। তৃতীয় যুক্তি, পাঁচ বছরে এক বারই দেশে নির্বাচনী আচরণ বিধি কার্যকর হবে। ফলে বার বার উন্নয়নমূলক কাজ থমকে যাবে না। বিজেপি যদি একান্ত ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি আনতে না পারে অন্তত এটা বলতে পারবে, ‘‘দেশের এত এত ভাল করতে চেয়েও বিরোধীদের জন্য পারা গেল না। তাই আরও শক্তিশালী সরকার চাই।’’

Mamata Banerjee BJP TMC One Nation One Election

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।