অধীরের উদ্যোগে ঘরে ফেরার আশা। ছবি: সংগৃহীত।
আইনি প্রক্রিয়া মেনে বাড়ি ফেরানো হবে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বাসিন্দাদের। এমনটাই জানাল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর দফতর। গত আট মাস ধরে বাংলাদেশি সন্দেহে ভিন্রাজ্যের জেলে বন্দি পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের বাসিন্দা পলাশ অধিকারী এবং তাঁর স্ত্রী শুক্লা অধিকারী। মঙ্গলবার আনন্দবাজার অনলাইনে এই প্রতিবেদন পড়ে ওই দম্পতিকে ফেরাতে উদ্যোগী হন বহরমপুরের সাংসদ। অধীরের দফতর থেকে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের প্রধান সচিব এবং বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করা হয়। বুধবার বেশ কয়েক বার দু’পক্ষের আলোচনাও হয়। কী ভাবে ওই দম্পতি এবং তাঁদের সঙ্গে আটকে থাকা অন্যদের বাড়িতে ফেরানো যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা হয়।
তবে ওই দম্পতিকে ফেরাতে আপাতত কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। সেই আইনি জটিলতা কাটলেই তাঁদের পশ্চিমবঙ্গে ফেরানো সম্ভব হবে বলে বেঙ্গালুরুর প্রশাসন থেকে জেনেছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দফতর। তাই ওই দম্পতির আইনজীবীর সঙ্গেও কথা বলেছেন তাঁরা। কোন কোন ক্ষেত্রে তাঁদের সহযোগিতার প্রয়োজন, তা-ও আইনজীবীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে। জামালপুরের দম্পতির ছাড়া পাওয়ার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে, তা আইনজীবী জানিয়েছেন। আপাতত সব রকম আইনি সহায়তা দিতে তাঁরা প্রস্তুত, তা-ও প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের জৌগ্রাম পঞ্চায়েতের তেলে গ্রামের বাসিন্দা পলাশ এবং শুক্লা। নিম্নবিত্ত ওই পরিবারের সদস্যেরা বাড়তি রোজগারের আশায় গত বছর জুন মাসে বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলেন। উঠেছিলেন মারাথাহাল্লি মহকুমার ভারথুর থানার সুলিবেলা গ্রামে একটি বাড়িতে। হোটেল, রেস্তরাঁ, সিনেমা হল-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে বর্জ্যবস্তু, বোতল, প্লাস্টিক জাতীয় সরঞ্জাম বাছাই করা ছিল তাঁদের কাজ। আচমকাই গত ২৭ জুলাই ভারথুর থেকে সস্ত্রীক পলাশকে বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেফতার করে সেখানকার পুলিশ। নিজেদের ভারতীয় বলে প্রমাণ করতে গিয়ে আধার, প্যান, ভোটার কার্ড-সহ সব তথ্য পুলিশকে দিয়েছে ওই দম্পতি।
পুলিশ পলাশের বৃদ্ধ বাবা, মা এবং প্রতিবেশী সুনীল অধিকারীকে ছেড়ে দিলেও তাঁকে, তাঁর স্ত্রী এবং শিশুপুত্রকে ছাড়েনি। ছেলে-পুত্রবধূ এবং নাতিকে ছাড়িয়ে আনতে অনেক চেষ্টা করেও ফল পাননি বৃদ্ধ পঙ্কজ। কিন্তু দরিদ্র ওই বৃদ্ধ আইনি লড়াই করতে গিয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন বলে পরিবারের দাবি। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। মঙ্গলবার গ্রামে বৃদ্ধের দেহ ফিরলে শেষকৃত্য করেন দুই মেয়ে। এখন ভিন্রাজ্যে পুলিশি হেফাজতে থাকা দম্পতিকে নিজ গৃহে ফিরিয়ে আনাই আপাতত লক্ষ্য অধীরের। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেসের সাংগঠনিক ইন চার্জ নিলয় প্রামাণিক বলেন, ‘‘বুধবার থেকে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে শুরু করে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের ফেরানোর ব্যাপারে কথা বলেছিলাম। কিন্তু ওই দম্পতির আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, বেশ কিছু আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই তাঁদের ফেরানো সম্ভব। তাই আমরা সব রকম সাহায্য দেওয়ার কথা আইনজীবীকে জানিয়ে দিয়েছি। আশা করব যাবতীয় আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে ওঁদের আমরা দ্রুতই নিজেদের বাড়ি ফেরাতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy