তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার। ফাইল চিত্র।
সোমবার মঞ্চে উঠেই বিরোধীদের লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করেছিলেন। হঠাৎই সুর বদলালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের মঞ্চের নীচে তখন থিকথিকে ভিড়। যুব তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি, যিনি বর্তমানে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন, নিজেই ভিড় দেখে অভিভূত। মঞ্চে উঠে বলেওছেন, ‘‘যতদূর দেখা যাচ্ছে কালো মাথা! বাংলার মানুষের এই সমর্থন অন্য কারও আছে? বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেস একসঙ্গে নামলে তাদের ১০ গোলে দিয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেব।’’ কিন্তু তার পরই অভিষেকের কণ্ঠে শোনা গেল আশঙ্কা। আশঙ্কা এই যে, তৃণমূলের জনসমর্থন দেখলেই বিরোধীরা নড়েচড়ে বসে। তখন নানা ভাবে তারা তৃণমূলকে আক্রমণ করার চেষ্টা করে। পুরনো অভিজ্ঞতা ঝালিয়ে তিনি বললেন, ‘‘এই যে আজকে এত বড় সমাবেশ, আপনারা আমার কথা লিখে রাখুন, চার পাঁচ দিনের মধ্যে আবার কিছু একটা করবে।’’
এর আগে তৃণমূলের বড় সভা হয়েছে ২১ জুলাই। তার পর দিনই রাজ্যের অধুনা প্রাক্তন, তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল ইডি। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘২১ জুলাই আমাদের সমাবেশ হল। ২২ জুলাই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে ইডিকে পাঠিয়ে দেওয়া হল। ২২ জুলাই কেন? কেন ২৩ জুলাই নয়। কেন ২৪ জুলাই নয়?’’ পুরনো ঘটনার প্রসঙ্গ টেনেই তৃণমূল সাংসদ তাঁর আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তিনি সম্ভবত বলতে চেয়েছেন, ২১ জুলাইয়ের সভার তৃণমূলের জনসমর্থন দেখার পরই যেমন রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত ইডি এবং সিবিআই তৎপর হয়েছিল, তেমনই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জনসমর্থনের বহর দেখার পরও না একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে।
তবে আশঙ্কার কথা জানালেও আক্রমণের ধার কমাননি অভিষেক। তিনি যেমন বলেছেন, ‘‘চার পাঁচ দিনের মধ্যে ওরা আবার কিছু একটা করবে।’’ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ব্যাখ্যা, ‘‘কেন করবে? তার কারণ, ওদের রাজনৈতিক ভাবে লড়ার ক্ষমতা নেই। দিল্লিতে সব চুড়ি পরে বসে আছে। আর এখানে ইডি আর সিবিআইকে লাগিয়েছে।’’ বিরোধীদের সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেছেন, ‘‘এসো না মাঠে ময়দানে লড়াই হবে।’’ বলেছেন, ‘‘দু’জনকে গ্রেফতার করে তৃণমূলকে শেষ করা যাবে না।’’ এ-ও বলেছেন যে, ‘‘বাংলার সংগ্রাম চলবেই।’’
বস্তুত, তৃণমূলের নেতা পার্থ এবং অনুব্রতের কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে গ্রেফতারির পর তাঁদের নিয়ে প্রকাশ্যে এ ভাবে নিজের বক্তব্য জানালেন অভিষেক। সরাসরি না হলেও বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূলের দুই নেতা পার্থ বা অনুব্রতের গ্রেফতারির নেপথ্যে আসলে কাজ করছে বিরোধী বিজেপির ‘অসূয়া’। এমনকি সোমবার মেয়ো রোডে ছাত্র পরিষদের মঞ্চ থেকে বিরোধীদের আক্রমণ করে অভিষেককে এ কথাও বলতে শোনা যায় যে, ‘‘তৃণমূলের জনসমর্থন দেখে গায়ের জ্বালা হচ্ছে বিরোধীদের।’’ উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থকে সিবিআই গ্রেফতার করার পর অভিষেক এক বারই প্রকাশ্যে নিজের কথা বলেছিলেন। দলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির বৈঠকে পার্থকে দলের সব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর জানিয়েছিলেন, দোষীদের দোষ প্রমাণ হলে দল কখনওই তাদের সমর্থন করবে না, তা তিনি যত বড় নেতা-ই হন না কেন। সোমবার অবশ্য অভিষেকের কথায় দলের নেতাদের ভূমিকার চেয়ে বেশি কেন্দ্রকেই আক্রমণ করতে শোনা গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy