চলছে রেললাইন সারানোর কাজ। শনিবার চেঙ্গাইলে। ছবি: সুব্রত জানা
শীতের সকালে রেললাইনে বসে রোদ পোহাচ্ছিলেন কয়েক জন মহিলা। হঠাৎ দেখলেন, রেললাইন বেঁকে যাচ্ছে। সেখান থেকে ধোঁয়া উড়ছে। বাড়ি থেকে বালতিতে জল আনতে আনতেই দেখা গেল, ট্রেন আসছে। বিপদ বুঝে তখন শাড়ির আঁচল নাড়াতে শুরু করেন তাঁরা। কিছুটা দূরে রেললাইন পরীক্ষার কাজ করছিলেন রেলকর্মীরা। মহিলাদের চিৎকারে তাঁরা ছুটে এসে লাল কাপড় নাড়াতে থাকেন। ওই জায়গার কিছুটা আগে ব্রেক কষে ট্রেন থেমে যায়।
শনিবার দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার চেঙ্গাইল স্টেশনের কাছের ঘটনা। স্থানীয়েরা বলছেন, মহিলারা তৎপর না হলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। থমকে যাওয়া ডাউন মেচেদা-হাওড়া লোকালের যাত্রীরাও একই কথা বলেন। রেলের আধিকারিকেরা অবশ্য মহিলাদের কৃতিত্ব মানতে চাননি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক আদিত্য চৌধুরী বলেন, ‘‘রেললাইন মেরামতের সময় একটা সমস্যা হয়েছিল। তার জন্য বেশ কিছুক্ষণ ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। লাইন মেরামতের পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। কেন এই ঘটনা ঘটল, তদন্ত করা হবে।’’
রেলকর্তারা যা-ই বলুন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ঊষা পাত্র, মিতা পাত্রদের বক্তব্য, প্রতিদিন লাইন পরীক্ষা করেন রেলকর্মীরা। এ দিনও করছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ডাউন মেদিনীপুর-হাওড়া গ্যালপিং লোকাল বেরিয়ে যাওয়ার পরেই ওই ঘটনা ঘটে। মহিলাদের দাবি, ‘‘লাইন বেঁকে গিয়েছিল। ধোঁয়া দেখে বাড়ি থেকে বালতি করে জল এনে লাইনে ঢালতে থাকি। চিৎকার করে রেলকর্মীদের ডাকতে থাকি। এর মধ্যেই দেখি, ট্রেন ঢুকছে। তখনই শাড়ির আঁচল দেখাতে শুরু করি। রেলকর্মীরাও ছুটে এসে লাল কাপড় নাড়াতে থাকেন।’’
ঘটনার জেরে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। তপন সরকার নামে এক যাত্রী বলেন, ‘‘ওঁদের সকলের জন্য রক্ষা পেলাম।’’ ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে এক রেলকর্মী জানান, মহিলাদের চিৎকার শুনে তাঁরা ছুটে আসেন। বিপদ বুঝে লাল কাপড় নাড়াতে থাকেন। প্রায় ৫০ মিটার আগে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy