জমি-জায়গা নিয়ে বিবাদ চলছিল অনেক দিন ধরেই। কিন্তু তার পরিণতি যে এমন হবে তা বোধহয় কেউই ভাবতে পারেননি। অভিযোগ উঠেছে, শুক্রবার বরাহনগরে বসতবাড়ি ও তার সংলগ্ন পাঁচ কাঠা জমি নিয়ে বিবাদের জেরে বৌমা আর নাতির বেধড়ক পিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে ৭৮ বছরের বৃদ্ধা মাধবী জানার। ওই দিনই মাধবীদেবীর পুত্রবধূ শিখা জানা ও নাতি দেবাঙ্গনকে গ্রেফতার করেছে বরাহনগর থানার পুলিশ।
বরাহনগরের নিয়োগী পাড়ার ৫ নম্বর ব্যারিস্টার পি মিত্র রোডের একটি পুরনো দোতলা বাড়িতে ছেলে দেবাশিস, বৌমা শিখা ও নাতি দেবাঙ্গনের সঙ্গে থাকতেন মাধবী জানা। কাছেই থাকেন মাধবীদেবীর ছোট মেয়ে সোমা প্রামাণিক। প্রতিবেশীদের বক্তব্য, সম্পত্তি নিয়ে নিত্য বিবাদ লেগেই থাকত এই পরিবারে। বসতবাড়ি ও সংলগ্ন পাঁচ কাঠা জমি ছাড়াও ওই পাড়াতেই আরও তিনটি জমি ছিল মাধবীদেবীর নামে। সম্প্রতি তার মধ্যে একটি জমি তিনি লিখে দিয়েছিলেন মেয়ে সোমার নামে। অভিযোগ, বাকি সম্পত্তিগুলো ছেলে দেবাঙ্গনের নামে লিখে দেওয়ার জন্য শ্বাশুড়ির উপর চাপ সৃষ্টি করতেন শিখাদেবী। গালিগালাজের সঙ্গে চলত মারধরও। শুধু তাই নয়, সম্পত্তি নিয়ে স্বামী দেবাশিসের সঙ্গেও নিত্য অশান্তি লেগে থাকত স্ত্রী-পুত্রের।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের জেরে মানসিক ভারসাম্য হারাল ছাত্রী
ওই দিন সকাল থেকেই ফের বাবা-ছেলের মধ্যে প্রচণ্ড অশান্তি শুরু হয়। ইঁট আর চেলাকাঠ নিয়ে বাবাকে পেটায় দেবাঙ্গন। নাতিকে ঠেকাতে এলে নাতি আর বৌমার হাতে মার খান মাধবীদেবী। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। খবর পেয়ে ছুটে আসেন মাধবীদেবীর ছোট মেয়ে সোমা। এর পরেই দাদা ও মা’কে নিয়ে বরাহনগর থানায় অভিযোগ করতে যান। এরই পাশাপাশি, ছেলেকে নিয়ে বরাহনগর থানায় যান শিখাদেবীও। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে এই পরিবারের অভিযোগ নিতে নিতে ক্লান্ত বরাহনগর থানা থেকে তাঁদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। থানা থেকে বেরিয়ে আহত মাধবীদেবী ও দেবাশিসবাবুকে নিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে যান সোমা। এই সময় থেকেই অবস্থার অবনতি হতে থাকে মাধবীদেবীর। কামারহাটির সাগরদত্ত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। চিকিৎসকেরা জানান, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জন্যই মৃত্যু হয়েছে মাধবীদেবীর। এর পরেই শুক্রবার রাতে পুত্রবধূ শিখা জানা ও নাতি দেবাঙ্গনকে গ্রেফতার করে বরাহনগর থানার পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy