দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। মারিশদায়। —নিজস্ব চিত্র।
কান্দি থেকে দিঘা যাওয়ার পথে পর্যটকদের গাড়ির সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে মৃত্যু হল চালক-সহ গাড়ির ৬ জন আরোহীর। নন্দকুমার-দিঘা ১১৬বি জাতীয় সড়কে বুধবার ভোরে ওই দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মারা যান ৫ জন। কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে এক জনকে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ৬ জন পর্যটক নিয়ে বোলেরো গাড়িটি মুর্শিদাবাদের কান্দি থেকে আসছিল। আরোহীদের পাঁচজন কান্দির তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েতের নানা পদে ছিলেন। মৃতদের নাম হায়দার আলি (৪৬)। বাড়ি পুরন্দরপুর। তিনি কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ। দেবসাগর দে (৪২)। বাড়ি তিলিপাড়ায়। তিনি পুরন্দরপুর পঞ্চায়েতের সদস্য। হাটগাড়ার বাসিন্দা আব্দুল হাজি কালাম শেখ (৫২) কান্দি ব্লকের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ও গোকর্ণ-২ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য। ঘনশ্যামপুরের বাসিন্দা সমর নাথ ঘোষ (৪৬) পুরন্দরপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সভাপতি। অসিত দাস (৫৪) পুরন্দরপুরে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি এবং গাড়ির চালক প্রদীপ কুমার দাস (৩০)। তিনি রসোরা গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দুর্ঘটনা ঘটে। হঠাৎই বিকট আওয়াজ শুনে স্থানীয় লোকজন ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। স্থানীয় এক যুবক জানান, বাসটি দিঘা থেকে হাওড়া যাচ্ছিল। সেটি একটি লরিকে ওভারটেক করতে গেলে উল্টোদিক থেকে প্রচণ্ড গতিতে আসা গাড়িটির সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পুলিশেরও অনুমান, বাসটি ওভারটেক করতে যাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। গাড়িটির গতিও তখন খুব বেশি থাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। ১১৬ বি জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। ফলে রাস্তার দু’দিকে খুঁড়ে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা তপন গুড়িয়া জানান, যেখানে রাস্তা খোঁড়া হয়েছে, সেখানে কম গতিতে আসার পর ফাঁকা রাস্তা পেয়েই গাড়িগুলি গতি বাড়িয়ে দেয়। এর আগেও দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: ৬ মাস আগে চুক্তি শেষ, তবু আধার চলছে
পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘ওই এলাকার রাস্তা খারাপ। গাড়ির গতি বেশি থাকায় সম্ভবত চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন। তবে ঠিক কী কারণে দুর্ঘটনা, পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে।’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘ওঁরা সকলে আমার পরিচিত। একসঙ্গে রাজনীতি করেছি। স্বজনহারা পরিবারকে সমবেদনা জানাই।’’
যে ছ’জন মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে চার জনের দিঘা বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না বলে পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন। অসিত দাসের স্ত্রী সাগরিকা বলেন, ‘‘গাড়িতে ওঠার ১০ মিনিট আগেও যাওয়ার ইচ্ছে ছিল না স্বামীর। কিন্তু জোর করে অন্যরা ওঁকে নিয়ে যান। আমাদের না নিয়ে একা বেড়াতে যাওয়ার জন্য মজাও করি। রাত মঙ্গলবার সাড়ে ৯টা নাগাদ এক বার ফোনে কথা হয়। সেই শেষ।’’ চার বছর আগে বিয়ে হয়েছে প্রদীপের। পাথরের মতো বসে রয়েছেন স্ত্রী পাপিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy