কারও স্লোগান ‘নকশালবাড়ি চলো’। কারও প্রস্তুতি নকশালবাড়ি-শিলিগুড়ি ‘লং মার্চ’-এর। কেউ আবার প্রায় এক বছর ধরেই নকশাল-আন্দোলন বিষয়ক কর্মসূচি লাগাতার চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী ২৫ মে নকশালবাড়ি আন্দোলনের পঞ্চাশ বছর পূর্তি। তার আগে নিজেদের কর্মসূচির সঙ্গে নকশালরা জুড়ে নিয়েছেন সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী প্রচারকে। এবং সেই আন্দোলনে সিপিএমের মতো সব বামপন্থীকেই সঙ্গে চাইছেন।
যে সংগঠনগুলি ২৫ থেকে ২৮ মে নকশালবাড়ি আন্দোলনের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে বলে ঠিক করেছে, তারা কেউই নিষিদ্ধ সংগঠন নয়। এই কর্মসূচির পুরোভাগে থাকছেন চারু মজুমদারের ছেলে সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর দার্জিলিং জেলা সম্পাদক অভিজিৎ মজুমদার থেকে শুরু করে ভাঙড়ে আন্দোলনকারী সিপিআই (এমএল) রেড স্টারের কে এল রামচন্দ্রনের মতো অনেক নেতা। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, নকশালদের প্রকাশ্য সংগঠনের জোট বাঁধার প্রক্রিয়া দেখে আডা়ল থেকে সক্রিয় হয়েছেন মাওবাদী নেতানেত্রীদের একাংশ। সে কথা মাথায় রেখে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্যের গোয়েন্দারাও।
সরকারি সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা নকশালপন্থীদের নানান জোটবদ্ধ কর্মসূচি নিয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। রাজ্যের গোয়েন্দারাও অতি বামপন্থীদের তৎপরতার বিষয়ে নবান্নকে জানিয়েছেন। রাজ্য গোয়েন্দাদের এক শীর্ষ কর্তা শিলিগুড়ি-নকশালবাড়ির বিভিন্ন এলাকা ঘুরেও এসেছেন। সরকারি সূত্রেই জানা গিয়েছে, নকশালবাড়ি এবং শিলিগুড়ি করিডরে ইদানীং দক্ষিণের নকশাল নেতাদের যাতায়াত বেড়ে গিয়েছে বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠিয়েছেন কেন্দ্র ও রাজ্যের কয়েক জন গোয়েন্দা।
তবে নকশাল নেতাদের অনেকেই জানান, তাঁরা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষেই সব কর্মসূচি নিচ্ছেন। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘নকশাল আন্দোলনের সুবর্ণজয়ন্তী পালনের জন্য নভেম্বর থেকে খড়িবাড়ি, ফাঁসিদেওয়া, নকশালবাড়িতে পদযাত্রা করেছি। ২৫ মে শিলিগুড়িতে সভা হবে। সেখানে অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রতিনিধিরা আসবেন।’’ এর পরে ২৬-২৮ মে প্রায় ৫ বছর পরে ফের শিলিগুড়িতে সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক হবে।
রামচন্দ্রনও এক দফা শিলিগুড়ি ঘুরে গিয়েছেন। অভিজিৎবাবু জানিয়েছেন, বামপন্থীরা জোট বাঁধলে সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলিকে কোণঠাসা করা সহজ হবে। তাঁরা সকলেই বিজেপির পাশাপাশি শাসকদল তৃণমূল থেকেও দূরত্ব রাখতে চাইছেন। তবে সিপিএম বা অন্য কোনও বাম দল এখনও এই সব কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে কি না, জানায়নি। তাদের বক্তব্য, আপাতত পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy