মেদিনীপুর আদালতে ধৃতেরা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরনের কনভয়ে হামলায় ধৃত সকলেই জামিন পেলেন। মেদিনীপুর সদর ব্লকের পাঁচখুরির ওই ঘটনায় প্রথমে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে আরও দু’জনকে ধরা হয়। ধৃত ১০ জনকেই শুক্রবার মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হয়েছিল। আদালত সকলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে।
এই ১০ জনই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক বলে এলাকায় পরিচিত। ফলে, পুলিশকে বিঁধেছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শুভজিৎ রায় বলেন, ‘‘পুলিশ লোক দেখানো গ্রেফতার করেছিল। তৃণমূল নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ হবেন, এমন কাজ কখনওই পুলিশ করবে না।’’ শুভজিতের আরও দাবি, ‘‘ঘটনায় জড়িত সকলকে এখনও পুলিশ গ্রেফতারই করেনি।’’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি পাল্টা বলছেন, ‘‘পুলিশ নিরপেক্ষ পদক্ষেপ করেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসন এ ভাবেই চলে। এটা উত্তরপ্রদেশের পুলিশ নয়।’’ কিন্তু ধৃত সকলেই তো জামিন পেয়ে গিয়েছেন? তৃণমূল জেলা সভাপতির জবাব, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। সরকারপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ নাজিম হাবিব এ দিন আদালতে ধৃতদের জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করেছিলেন। তবে আদালত সকলের জামিনই মঞ্জুর করেছে। পুলিশ সূত্রে দাবি, ঘটনায় জড়িত বাকিদের খোঁজ চলছে। শুক্রবার পাঁচখুরিতে চাপা উত্তেজনা ছিল। নতুন করে অশান্তি এড়াতে পুলিশি নজরদারি চলেছে।
ভোট পরবর্তীকালে ‘আক্রান্ত’ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার পাঁচখুরিতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বিদেশ ও সংসদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরন। সঙ্গে ছিলেন রাহুল সিংহ-সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা। পাঁচখুরিতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। তাঁর কনভয়ে তৃণমূলের লোকেরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। হামলাকারীদের কারও হাতে ছিল বাঁশ, কারও হাতে কাঠ। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর কনভয়ে থাকা গাড়িগুলি লক্ষ করে ইটও ছোড়া হয়। প্রতিমন্ত্রীর গাড়ির কাচ ভাঙে। পাইলট গাড়ির কাচও ভাঙে। কয়েকজন জখম হন। এর মধ্যে তিন সাংবাদিকও রয়েছেন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে গাড়ি ঘুরিয়ে নেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
তৃণমূল জেলা সভাপতি বলেন, ‘‘আমি শুনেছি, দু’পক্ষের বচসার মধ্যে সাংবাদিকেরা পড়ে গিয়েছিলেন। সাংবাদিকেরা যাঁরা আহত হয়েছেন, তার জন্য আমি দুঃখপ্রকাশ করেছি। তাঁদের প্রতি সহানুভূতি জানাচ্ছি।’’ অজিতের আরও দাবি, ‘‘পাঁচখুরিতে গ্রামের মানুষজন ক্ষিপ্ত হয়ে যা করার করেছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী গোটা গ্রাম দাপিয়ে বেড়িয়ে প্ররোচনা ছড়িয়েছেন।’’ কিন্তু ভোট পরবর্তী গোলমালে লাগাম নেই কেন? অজিতের জবাব, ‘‘অশান্তি তৈরির চেষ্টা বিজেপির লোকেরা করছে। আমরা দলের সবাকে জানিয়েছি, কেউ কোথাও ছোটখাটো অশান্তিতেও যাবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy