Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Illegal Arms

Firearms Smuggling: দম্পতি সেজে অস্ত্র পাচারের চেষ্টা, ধৃত তিন

কলকাতায় পাচারের পথে রবিবার সন্ধ্যায় হুগলির ডানকুনি টোল প্লাজ়ার কাছে সেই সব অস্ত্র উদ্ধার করেছে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।

 আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃত মহিলাকে।

আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃত মহিলাকে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২১ ০৫:০৪
Share: Save:

ধানবাদ থেকে কলকাতামুখী বাসটিতে তারা উঠেছিল স্বামী-স্ত্রী হিসেবে। সঙ্গী ছিলেন অন্তত এক জন। সঙ্গের ব্যাগে ছিল অর্ধেক বা তার বেশি তৈরি ৪০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও অস্ত্রাদির যন্ত্রাংশ। কলকাতায় পাচারের পথে রবিবার সন্ধ্যায় হুগলির ডানকুনি টোল প্লাজ়ার কাছে সেই সব অস্ত্র উদ্ধার করেছে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামী-স্ত্রী সেজে বাসে ওঠা মহম্মদ সাগির ও হাসিনা বেগম এবং তাদের সঙ্গী ইমতিয়াজ আহমেদকে। পুলিশ জানায়, বেআইনি অস্ত্রের কারবারে এর আগে অনেক পুরুষ গ্রেফতার হলেও অনুরূপ অভিযোগে কোনও মহিলা এই প্রথম ধরা পড়ল।

বিহারের মুঙ্গের থেকে চোরাপথে আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গে পাচার করা হয়ে আসছে দীর্ঘ কাল ধরে। পুলিশি তল্লাশি বেড়ে যাওয়ায় দুষ্কৃতীরা এখন লরিতে বা যাত্রিবাহী বাসেও অস্ত্র পাচার করছে। তাতেও ধরপাকড় চলায় পুরো তৈরি আগ্নেয়াস্ত্রের বদলে অর্ধেক তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, অস্ত্রের যন্ত্রাংশ নিয়ে আসছে তারা। এবং সেই কাজে মহিলাদেরও যে ব্যবহার করা হচ্ছে, রবিবারের ঘটনাই তার প্রমাণ বলে তদন্তকারীদের দাবি। পুলিশি সূত্রের খবর, অস্ত্র পাচারের আগাম খবর ছিল গোয়েন্দাদের কাছে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটে পুলিশের সাহায্য নিয়ে এসটিএফ রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ডানকুনি টোল প্লাজ়ায় ঢোকার মুখে বাসটি থামিয়ে তিন জনকে ধরে ফেলে। সোমবার ধৃত তিন জনকে শ্রীরামপুর আদালত তোলা হলে বিচারক তাদের ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগির ও হাসিনা বাস্তবে স্বামী-স্ত্রী নয়। পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিতেই বাসে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সফর করছিল তারা। হাসিনার বাড়ি গার্ডেনরিচের শ্যামলাল লেনে। সাগিরের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকার মহেশতলায়। ইমতিয়াজ আদতে মুঙ্গেরের বাসিন্দা, তবে থাকত কলকাতার মেটিয়াবুরুজের ভিলেজ রোডে। হাসিনা এই কারবারে নতুন হলেও ইমতিয়াজ এর আগে একাধিক বার মুঙ্গের থেকে অস্ত্র এনে কলকাতায় সরবরাহও করেছে। ধরাও পড়েছিল কলকাতা পুলিশ ও বিভিন্ন জেলার পুলিশের হাতে। ধৃতদের জেরা করার পরে গোয়েন্দারা জানান, মুঙ্গের থেকে আধা-তৈরি অস্ত্র আনা হচ্ছিল বিশেষত কলকাতার বন্দর এবং তার আশপাশে সরবরাহ করার জন্য।

এক তদন্তকারী জানান, কলকাতা এবং আশেপাশে গত কয়েক বছরে অনেক অস্ত্র কারখানার হদিস পাওয়া গিয়েছে। মুঙ্গের থেকে কারিগরেরা এসে ওই সব কারখানায় অস্ত্র তৈরি করত। কিন্তু পুলিশি ধরপাকড়ের ফলে তাদের প্রচুর টাকা লোকসান হয়। গ্রেফতারও হয় বেশ কিছু দক্ষ কারিগর। তার পর থেকে মুঙ্গেরের দক্ষ অস্ত্র-কারিগরেরা বাংলায় এসে কাজ করতে রাজি হচ্ছিল না। তাই পশ্চিমবঙ্গের কারখানায় অস্ত্র তৈরির বদলে মুঙ্গের থেকে অর্ধপ্রস্তুত অস্ত্র ও যন্ত্রাংশ আনার পথ ধরে কারবারিরা।

গোয়েন্দারা জানান, জেরায় ধৃতেরা কবুল করেছে, আধা-তৈরি অস্ত্র ও যন্ত্রাংশ কলকাতার নির্দিষ্ট জায়গায় লুকিয়ে রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের। পরে মুঙ্গের থেকে কারিগরেরা এসে সেই সব যন্ত্রাংশ জোড়া দিয়ে আস্ত অস্ত্র তৈরি করত। এতে লেদ মেশিনের কোনও দরকার না-পড়ায় নজর এড়িয়ে কাজটা করা যেত।

অন্য বিষয়গুলি:

Illegal Arms STF
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy