Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পায়ুতে সোনা, সীমান্তে হদিস আন্তর্জাতিক চক্রের

এত দিন পায়ুর ভিতরে লুকিয়ে সোনা আনতে গিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে ধরা পড়ত পাচারকারীরা। এ বার পেট্রাপোল সীমান্তে সোনা পাচারেও তারা একই রাস্তা নিল। শুল্ক অফিসারেরা জানাচ্ছেন, পায়ুতে সোনা আনলে পাচারকারীর চলাফেরায় তার প্রভাব পড়ে। প্রতি বার বিমানবন্দরে যাত্রীদের চলাফেরা দেখেই তাঁদের সন্দেহ হয়েছে।

সীমান্ত মৈত্র
পেট্রাপোল শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৪ ০২:৩১
Share: Save:

এত দিন পায়ুর ভিতরে লুকিয়ে সোনা আনতে গিয়ে কলকাতা বিমানবন্দরে ধরা পড়ত পাচারকারীরা। এ বার পেট্রাপোল সীমান্তে সোনা পাচারেও তারা একই রাস্তা নিল।

শুল্ক অফিসারেরা জানাচ্ছেন, পায়ুতে সোনা আনলে পাচারকারীর চলাফেরায় তার প্রভাব পড়ে। প্রতি বার বিমানবন্দরে যাত্রীদের চলাফেরা দেখেই তাঁদের সন্দেহ হয়েছে। তবে পেট্রাপোল সীমান্তে যে এ ভাবে সোনা পাচার হতে পারে, তার আগাম খবর শুল্ক বিভাগের কাছে ছিল। ওত পেতে চার জনকে পাকড়াও করা হয়। তারা অবশ্য প্রথমে সোনা পাচারের কথা স্বীকার করতে চায়নি। পরে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে তারা হাল ছেড়ে দেয়। উদ্ধার হয় পাঁচ কেজিরও বেশি ওজনের ছোট-ছোট ১৮টি সোনার টুকরো ও চারটি রিং।

এই ঘটনায় কার্যত চমকে গিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তে শুল্ক দফতর থেকে শুরু করে বিএসএফের কর্তারা। তাঁদের দাবি, সীমান্ত দিয়ে আগে এ ভাবে সোনা পাচার হয়নি। বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে সোনা পাচারের নিত্যনতুন পন্থা তাঁদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার স্বরূপনগর সীমান্তে এক দুষ্কৃতীর কাছ থেকে উদ্ধার হয় ৬০ সোনার বিস্কুট। তার আগে, মঙ্গলবার বাংলাদেশের বেনাপোল থেকে সোনার বিস্কুট নিয়ে এ দেশে ঢোকার সময়ে ৩৭টি সোনার বিস্কুট-সহ বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে এক বাংলাদেশি ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট। তাতে শুল্ক দফতর এবং বিজেপি বিশেষ ভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে।

শুল্ক অফিসারদের সন্দেহ, এ দিন যে চার জন ধরা পড়েছে, তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সোনা পাচার চক্রের যোগাযোগ রয়েছে। ধৃত রাজেশ কুমার, চিমন লাল, যোগেশ খন্না ও সুশীল খন্না আদতে দিল্লির বাসিন্দা। অফিসারদের দাবি, জেরায় তারা জানিয়েছে, সোনা আনার জন্য গত ১৭ জুন তারা সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ১৯ জুন ঢাকায় আসে। এ দিন বেনাপোল হয়ে এ দেশে ঢুকছিল। শুল্ক দফতরের সহকারী কমিশনার শ্রীরাম বিষ্ণু বলেন, “কয়েকটি সোনার বার কেটে বিস্কুটের মতো ১৮টি টুকরো করে পায়ুর ভিতরে নিয়ে আসছিল ওরা। সেগুলি ছাড়াও চারটি সোনার রিং উদ্ধার করা হয়েছে। ওজন সব মিলিয়ে পাঁচ কেজির উপরে, আর্ন্তজাতিক বাজারে যার মূল্য দেড় কোটি টাকার বেশি। ধৃতদের জেরা করে চক্রের সম্পর্কে আরও তথ্য জোগাড় করার চেষ্টা চলছে।’’

বিএসএফ এবং শুল্ক দফতর সূত্রের খবর, ক্লিয়ারিং এজেন্ট মারফত বা পায়ুর ভিতরে সোনা পাচার এর আগে সীমান্তে দেখা যায়নি। দুই ক্ষেত্রেই আগাম খবর ছিল। দু’দেশের ক্লিয়ারিং এজেন্টেদের কাজের সূত্রেই দু’পারে অবাধ যাতায়াত। তাঁদের কেউ সোনা পাচারে জড়িয়ে পড়লে তা ধরা সহজ নয়। অন্য দিকে, ‘বডি-স্ক্যানার’ না থাকলে পায়ুতে লুকিয়ে সোনা পাচার আটকানো মুশকিল। সীমান্তে এ ধরনের আধুনিক ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। তাই আগাম খবর না থাকলে এই সব নতুন উপায়ে পাচার রোখা যাচ্ছে না।

অন্য বিষয়গুলি:

gold simanta maitra petropol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE