Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
গোপালনগরে ধৃত স্বামী-শাশুড়ি

দেড় বছরের মেয়েকে বিষ খাইয়ে আত্মঘাতী বধূ

বারান্দা ও ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল মা ও দেড় বছরের শিশুকন্যার দেহ। তখনও গোঙাচ্ছেন মহিলা। পাশেই পড়েছিল কীটনাশকের শিশি। এই দৃশ্য দেখে চিত্‌কার করে উঠেছিলেন প্রতিবেশী এক বৃদ্ধা। ছুটে আসে আরও লোকজন। কিন্তু মা-মেয়েকে যত ক্ষণে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তত ক্ষণে মৃত্যু হয়েছে দু’জনেরই।

রূপা ও তাঁর মেয়ে শ্রেয়া।

রূপা ও তাঁর মেয়ে শ্রেয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোপালনগর শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৪ ০০:৫৭
Share: Save:

বারান্দা ও ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল মা ও দেড় বছরের শিশুকন্যার দেহ। তখনও গোঙাচ্ছেন মহিলা। পাশেই পড়েছিল কীটনাশকের শিশি। এই দৃশ্য দেখে চিত্‌কার করে উঠেছিলেন প্রতিবেশী এক বৃদ্ধা। ছুটে আসে আরও লোকজন। কিন্তু মা-মেয়েকে যত ক্ষণে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তত ক্ষণে মৃত্যু হয়েছে দু’জনেরই।

সোমবার গোপালনগরের পলতা-নতুনগ্রাম এলাকার ওই ঘটনায় রূপা বিশ্বাসকে (২২) আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে তাঁর স্বামী সুমন ওরফে সমরেশ ও তার মা শিখাকে মঙ্গলবার সকালে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ দিন ধৃতদের বনগাঁ আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিনের জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে বাংলাদেশ থেকে রূপাকে বিয়ে করে আনে সুমন। সে চাষবাসের কাজ করে। শ্রেয়ার জন্য রোজ দুধ নেওয়া হত বাড়িতে। রবিবার দুপুরে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন রূপা। গোয়ালা ডাকাডাকি করে ফিরে যায়। মেয়ের জন্য দুধ নেওয়া হয়নি বলে ছেলের কাছে নালিশ করেন শাশুড়ি। সে সবের রূপাকে সুমন বেধড়ক পেটায় বলে অভিযোগ। সোমবার সকালেও তাঁকে মারধর করা হয়। পুলিশের অনুমান, স্বামী-শাশুড়ি বেরিয়ে গেলে মেয়েকে কীটনাশক খাইয়ে পরে নিজেও কীটনাশক খান ওই বধূ। এক প্রতিবেশীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীকে নানা কারণে মারধর করত সুমন। তাকে বাড়ির বাইরে বেরোতে দেওয়া হত না। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সুমনের মদের নেশা ছিল। রাতে মদ খেয়ে বাড়ি ঢুকে মায়ের কথা শুনে স্ত্রীকে নির্যাতন করত। আগেও একটি বিয়ে ছিল তার। স্ত্রী ও সন্তানকে তাড়িয়ে দিয়েছিল সে। ভিন দেশে এসে কোনও আত্মীয় পরিজন না থাকায় রূপাদেবী মুখ বুজে অত্যাচার সহ্য করতে বাধ্য হতেন। প্রতিবেশীরা বার কয়েক প্রতিবাদ করেছিলেন। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সুমনের সঙ্গে একাধিক মহিলার সম্পর্ক আছে। স্থানীয় চালকি এলাকায় একবার এক মহিলাকে কটূক্তি করার অভিযোগে গণধোলাইও খেতে হয় তাকে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE