উজ্জ্বল চক্রবর্তীর দেহাংশের খোঁজে তল্লাশি। — নিজস্ব চিত্র।
অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা কর্মী উজ্জ্বল চক্রবর্তীর (৫৫) দেহ পুকুরে ফেলে তার পরে থানায় গিয়েছিল স্ত্রী শ্যামলী ও ছেলে রাজু চক্রবর্তী। তবে গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত তারা উজ্জ্বলের নিখোঁজ থাকার খবর সে ভাবে কোনও আত্মীয় ও বন্ধুদের জানায়নি বলে দাবি তদন্তকারীদের। খুন করে দেহ লোপাটের পরে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করতেই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল মা-ছেলে। আর তার পরে গ্রেফতারির আগে পর্যন্ত মাত্র দু’জনকে ফোন করেছিল তারা।
উজ্জ্বল, শ্যামলী এবং রাজুর দু’টি মোবাইলের তথ্য যাচাই করে তদন্তকারীদের দাবি, সাধারণত কেউ নিখোঁজ হলে তাঁর পরিবার চার দিকে খোঁজখবর করা শুরু করে। মূলত আত্মীয়, ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের কাছে খোঁজ নেওয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উজ্জ্বল নিখোঁজ হওয়ার পরে শ্যামলী ও রাজুর ফোন থেকে মাত্র দু’জনকে ফোন করা হয়েছিল। ১৪ নভেম্বর, সোমবার উজ্জ্বল খুন হন। দেহ উদ্ধার হয় শুক্রবার। শনিবার তিন জনের ফোন বাজেয়াপ্ত করার পরে রাতেই গ্রেফতার হয় শ্যামলী ও রাজু। এর মাঝে, মঙ্গল থেকে শনিবার পর্যন্ত মাত্র দু’জনকে ফোন করেছিল তারা। তদন্তকারীদের দাবি, খুনের পরে বাড়িতে তন্নতন্ন করে খুঁজেও টাকা না পেয়ে মা-ছেলে পালানোর পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয়। এর পরে দেহ পুকুরে ফেলে আসে।
মঙ্গলবার সকালে থানা থেকে ফিরে শ্যামলী ফোন করে তার দাদাকে। উজ্জ্বলের নিখোঁজ থাকার খবর জয়নগরের বহুড়ুর বাসিন্দা দাদাকে দিয়ে শ্যামলী আরও জানায়, সংসার খরচের জন্য হাতে টাকা নেই। দাদা যদি টাকার ব্যবস্থা করতে পারেন, সেই আশায় ছেলেকে তাঁর কাছে পাঠায় শ্যামলী। মঙ্গলবার সেখান থেকেই ছ’হাজার টাকা নিয়ে আসে রাজু। এ ছাড়া রাজু দু’বার ফোন করেছিল উজ্জ্বলের এক বন্ধুকে। তাঁর সঙ্গে কী কথা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের অনুমান, উজ্জ্বলের নিখোঁজ থাকার খবর দিয়ে তাঁর থেকেও টাকা চাওয়া হতে পারে। এ নিয়ে শ্যামলী ও রাজুুকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হচ্ছে।
তদন্তকারীদের দাবি, মোবাইলের তথ্য যাচাই করে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ঘণ্টাখানেক বান্ধবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলত রাজু। কিন্তু বাবাকে খুনের পরে এক বারও তাঁকে ফোন করেনি সে। তদন্তকারীদের দাবি, খুনের ব্যাপারটি যদি কেউ ধরে ফেলে, সেই ভয়েই উজ্জ্বলের নিখোঁজ থাকার খবর গোপন করার চেষ্টা করেছিল মা-ছেলে।
তদন্তকারীদের দাবি, শ্যামলীর দাদা পেশায় ব্যবসায়ী। তাই তাঁর কাছ থেকে মোটা টাকা নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করেছিল মা-ছেলে। কিন্তু মোটা টাকার বদলে মাত্র ছ’হাজার টাকা রাজুর হাতে দিয়ে আপাতত সংসার চালানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন মামা। তদন্তকারীদের দাবি, মোটা টাকা হাতে না আসা পর্যন্ত বাধ্য হয়েই তারা বাড়িতে রয়ে গিয়েছিল বলে জেরায় কবুল করেছে রাজু ও শ্যামলী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy