সৌগত রায়কে নাম না করে বিঁধলেন মদন মিত্র। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলে প্রার্থী-বিক্ষোভ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। প্রার্থিতালিকা প্রকাশের পর দলে যে বিক্ষোভের আবহ তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে নাম না করে দমদমের সাংসদ সৌগত রায়কে বিঁধেছেন মদন।
প্রার্থিতালিকা নিয়ে রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো ক্ষোভের আঁচে তপ্ত কামারহাটির তৃণমূল শিবিরও। এই পরিস্থিতিতে রবিবার সন্ধ্যায় কামারহাটির রথতলায় কর্মিসভা করেন এলাকার বিধায়ক মদন। সেখান থেকে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। দলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নাম না করে দমদমের সাংসদকে বিঁধেছেন কামারহাটির বিধায়ক। মদনের কথায়, ‘‘দলের মধ্যে এজেন্সি ঢুকিয়ে দলকে মিসগাইড করা হচ্ছে। দু’তিন জন পঞ্চায়েত মোড়লি করছে, যাতে দলের ফল ভাল না হয়। ইচ্ছা করে ঘেঁটে দেওয়া হচ্ছে।’’
এর পরেই মদনের আবেদন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আপনার পায়ে ধরে ভিক্ষা চাইছি! আপনি বলুন, মদন মিত্র কামারহাটি দেখবে। ৩৫টায় ৩৫টা না পেলে পদত্যাগ করব! কোনও মারামারি করব না। মানুষ দাঁড়িয়ে ভোট দেবে।’’
সাংসদ সৌগতকেও নিশানা করেছেন মদন। তাঁর অননুকরণীয় ভঙ্গিতেই বলেছেন, ‘‘ওই লুঙ্গি-ধুতি পরে খালি বোটি কাবাব! সহ্য হবে না। পাপ বাপকেও ছাড়ে না। ১৩ বার কেউ নির্বাচনী কেন্দ্র বদলায়! আমরা প্রিয়’দার (প্রয়াত প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি) সঙ্গে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রিয়’দার সঙ্গে। হঠাৎ দেখি এক জন লোক চরণ সিংহের সরকারে চলে গিয়েছে। সিগারেট খেতে খেতে বলছে, প্রিয় কী বলছিল?’’
মদনের বাণ— ‘‘আমরা এই ক্ষমতার দালালকে চাই না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমার আবেদন, কামারহাটি খুব সেনসেটিভ জায়গা।’’ গলায় কটাক্ষের সুর বজায় রেখে কামারহাটির তৃণমূল বিধায়কের আরও বক্তব্য, ‘‘উনি মেঘের আড়াল থেকে কথা বলেন। যখন ক্রাইসিস হয়, তখন লুঙ্গির আড়ালে চলে যান। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছি। এটা অন্তর্দ্বন্দ্ব নয়, সাবোতাজ। অন্তর্ঘাত। অন্য কোনও দলের সঙ্গে সেটিং হয়েছে।’’ সৌগতকে নিয়ে মদনের আরও বক্তব্য, ‘‘এক বার মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাস হল, কামারহাটি কর্পোরেশন হবে। বেরিয়ে এসে দেখি দু’জন নেতা বিবৃতি দিচ্ছেন, দমদম কর্পোরেশন হবে। বাহ! কারণ দমদমে মাল (অর্থ) বেশি! কামারহাটি কী জিনিস কামারহাটি বুঝিয়ে দেবে।’’
যতক্ষণ না দল নির্দেশ দিচ্ছে বা জেলা সভাপতি এসে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করছেন, ততক্ষণ দেওয়ালে প্রার্থীদের নাম না লেখার বার্তাও কর্মীদের দিয়েছেন মদন। পাশাপাশি কর্মীদের সঙ্ঘাতের পথে না হাঁটার কথাও বলেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, তৃণমূলের অন্দরের বক্তব্য, কামারহাটিতে বিক্ষোভের কারণ মদনের ‘ঘনিষ্ঠ’ লোকজন পুরভোটের টিকিট না-পাওয়ায়। তার পর থেকেই সেখানে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy