Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
সরকারি তৎপরতায় হতাশ বহু এলাকার মানুষ
Dengue

ভাঙড়ের গ্রামে চাঁদা তুলে ব্লিচিং দিচ্ছেন গ্রামবাসী

এই পরিস্থিতিতে অনেকে নিজের উদ্যোগে ব্লিচিং কিনে ছড়াচ্ছেন। যদিও ব্লক প্রশাসনের দাবি, মঙ্গলবার পুরসভার ওই দল ভোগালি-২, শানপুকুর পঞ্চায়েত এলাকায় ফগিং মেশিন নিয়ে ধোঁয়া ছড়িয়েছে।

সামসুল হুদা
ভাঙড় শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫৭
Share: Save:

দিন দিন বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। ডেঙ্গি মোকাবিলা করতে আসতে হয়েছে কলকাতা পুরসভার বিশেষ দলকে। ডেঙ্গির মশা মারতে মেশিন দিয়ে ধোঁয়া দেওয়া হচ্ছে ভাঙড়ের গ্রামে গ্রামে, ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং, কীটনাশক। কিন্তু গ্রামবাসীর অভিযোগ, সে সব স্রেফ লোক দেখানো। গ্রামের ভিতরে ঢুকে ঢুকে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। পুরসভার দল রাস্তার ধারে ধোঁয়া ছড়িয়ে চলে যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে অনেকে নিজের উদ্যোগে ব্লিচিং কিনে ছড়াচ্ছেন। যদিও ব্লক প্রশাসনের দাবি, মঙ্গলবার পুরসভার ওই দল ভোগালি-২, শানপুকুর পঞ্চায়েত এলাকায় ফগিং মেশিন নিয়ে ধোঁয়া ছড়িয়েছে। বাকি যা করারও করেছে।

গত কয়েক দিন ধরে ভাঙড় ২ ব্লকের ভুমরু, কাঁটাডাঙ্গা, চিনেপুকুর, শোনপুর, কাশীপুর, বেঁওতা-সহ বিভিন্ন এলাকায় বাড়ছে জ্বরের প্রকোপ। ইতিমধ্যেই ভুমরু গ্রামের দু’জন, কাঁটাডাঙ্গা গ্রামের দু’জন, পূর্ব কাঁঠালিয়া গ্রামের ১ জন, কাশীপুরের দু’জন জ্বরে ভুগে মারা গিয়েছেন বলে পরিবারের দাবি। ওই সব গ্রামে বহু মানুষ এখনও জ্বরে আক্রান্ত। অনেকে কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি।

ভুমরু গ্রামের সামসুর নাহার বিবি বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সদ্য বাড়ি ফিরেছেন। তাঁর দশ বছরের নাতি সুজাউদ্দিন মোল্লা এখনও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি। রক্তে এনএস-১ পজিটিভ। ওই গ্রামেরই ফিরদৌস বিবির গত কয়েক দিন ধরে জ্বর। বেলেঘাটা আইডিতে নিয়ে যাওয়া হলে শুধুমাত্র ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি ল্যাবে রক্ত পরীক্ষায় ‘ডেঙ্গি’ ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে পরিবার।

ওই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল রশিদ মোল্লা বলেন, ‘‘গ্রামে এত মানুষ জ্বরে আক্রান্ত, অথচ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই। ডেঙ্গি মোকাবিলায় তেমন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।’’

সোমবার পশ্চিম কাঁঠালিয়া, ভুমরু, কাঁটাডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে ব্লিচিং ছড়াচ্ছেন। আকচির মোল্লার কথায়, ‘‘চারি দিকে ডেঙ্গি হচ্ছে। গ্রামে অনেকের জ্বর। সরকারি ভাবে সব জায়গায় ব্লিচিং ছড়ানোর কথা। কিন্তু গ্রামে এখনও সেই উদ্যোগ চোখে পড়েনি। উল্টে পঞ্চায়েতে গেলে বলা হচ্ছে, ব্লিচিং নাকি ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় বাধ্য হয়ে আমরাই চাঁদা তুলে ব্লিচিং কিনে ছড়াচ্ছি।’’

ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য মানছেন, প্রত্যন্ত গ্রামের সর্বত্র এখনও পৌঁছনো যায়নি। তবে চেষ্টা তলছে। বারুইপুরের মহকুমাশাসক শ্যামা পরভিন জানিয়েছেন, কোথাও মশার উপদ্রব বাড়লে সে কথা বিডিওকে জানানো যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্লিচিং ছড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে।

ভাঙড় ২ বিডিও ধ্রুবচন্দ্র বিশ্বাস অবশ্য জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে পুরসভার দল বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে। তা ছাড়া, পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনও প্রয়োজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ করেছে। পর্যাপ্ত ব্লিচিং সব এলাকায় পাঠানো হয়েছে গ্রামে ছড়ানোর জন্য।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy