বাংলাদেশি নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য তৃণমূল নেত্রী রত্না বিশ্বাসের। — নিজস্ব চিত্র।
দলীয় সভায় বক্তৃতা করতে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে জোর বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূলের এক নেত্রী। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এসেছেন, ভোটার লিস্টে নাম তুলতে তাঁদের যদি কোনও সমস্যা হয়, তা হলে এক স্থানীয় তৃণমূল নেতার শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি, এক সভা থেকেই। এ ভাবে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিজেদের ভোটার বানিয়ে ভোটে জেতার ছক কষছে তৃণমূল— এই দাবি তুলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বিজেপি।
উপলক্ষ ছিল, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের জন্মদিন পালন। সেই অনুষ্ঠানে গিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভানেত্রী এবং কুমড়া পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সভানেত্রী তথা এলাকার তৃণমূল নেত্রী রত্না বিশ্বাস। তিনি দাবি করেন, তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি জাকির হোসেন ভোটার কার্ড বানানোর লিঙ্ক ভাল জানেন। ওঁর এলাকায় যত বাংলাদেশি আছেন, তাঁরা জাকিরদার সঙ্গে যোগাযোগ করলেই ভোটার কার্ড সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান হবে। রত্না বলেন, ‘‘জাকিরদার নির্বাচনী এলাকায় অনেক বাংলাদেশি লোক বসবাস করেন। জাকিরদা, অভিজিৎদা লিঙ্কটা ভাল বলতে পারেন। যদি লিঙ্কের কোনও সমস্যা হয় বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এসেছেন, ভোটার লিস্টে নাম তোলার ক্ষেত্রে যদি সমস্যায় পড়েন জাকিরদার কাছে গেলে ভাল বলে দেবেন। এই কাজটা অতি দ্রুত করবেন। আমরা চাই না একটা ভোটও বাদ যাক।’’
তিন মাসের মধ্যেই লোকসভা ভোট। তার আগে সব দলই নিজেদের মতো করে তৃণমূল স্তরের সংগঠনকে গুছিয়ে নেওয়ায় ব্যস্ত। চলছে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজও। তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী বরাবরই ভোটার তালিকার কাজকে বাড়তি গুরুত্ব দেন। এ বার এই প্রেক্ষিতেই বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্ক বাধিয়ে দিলেন তৃণমূলেরই এক নেত্রী। তিনি যে জাকিরের কাছে সহায়তা পাওয়ার কথা বলেছেন মঞ্চে সেই ব্যক্তি অবশ্য মুখ ফসকে বলে ফেলার কথা জানাচ্ছেন। জাকির বলেন, ‘‘তিনি ও ভাবে বলতে চাননি। রত্নাদি যেটা বলতে চেয়েছেন সেটা হল, ভোটার লিস্ট ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে দেওয়ার কথা। সেটা আমরা বরাবর করি। ওঁর বলার ক্ষেত্রে কিছুটা ভুল হয়েছে। আমরা শুধু ফর্মটা পূরণ করে দিই। কারও যদি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট খুলতে হয় তাহলেও আমরা ফর্ম পূরণ করে দিই। বাংলাদেশি কথাটা উচ্চারণ না করলেই ভাল হত। গ্রাম্য কথ্য ভাষায়, বাংলাদেশি বলতে যেটা উনি বোঝাতে চেয়েছেন তা হল, ৪৭ সালের আগে যাঁরা এখানে ছিল, তাঁরা ভারতীয় আর তাঁদের পরে যাঁরা এসেছেন তাঁরা বাংলাদেশি।’’
তৃণমূল বিতর্ক দূরে রাখতে চাইলেও বিরোধীরা ছেড়ে কথা বলছে না। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এই ঘটনার পর তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বেআইনি কারবার করার জন্য তৃণমূল গুছিয়ে বসে আছে। শুধু টাকাটা পেলেই হল!’’
যদিও বেফাঁস বলে বিতর্ক তৈরির পর নিজের বলা কথার ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে রত্নাকে। পরবর্তীতে একটি ভিডিয়োবার্তায় তিনি বলেন, ‘‘১৯৫১ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে যাঁরা ভারতে এসেছেন, সেই সমস্ত পরিবারের মধ্যে যাঁরা এখনও ভোটার লিস্টে নাম তুলতে পারেননি, তাঁদের ভোটার লিস্টে নাম তুলে দেওয়ার চেষ্টা করব। যদি তাঁদের পরিবারের ভোটার লিঙ্ক থাকে, সেই প্রতিশ্রুতিই দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy