নিকাশি বন্ধ করে গুদাম তৈরির প্রতিবাদে গ্রামবাসীর ফ্লেক্স (নীল রঙের)। তার পাশেই পাল্টা ফ্লেক্স। —নিজস্ব চিত্র।
একের পর এক গুদাম তৈরি হয়েছে শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের পিয়ারাপুরে, দিল্লি রোডের ধারে। অভিযোগ, নিকাশি ব্যবস্থার দফারফা করে সেগুলি হয়েছে। এ বার নির্মীয়মাণ দু’টি গুদামের গেটে ‘গ্রামবাসী’ উল্লেখে ফ্লেক্স লাগিয়ে সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থার দাবি জানানো হয়েছে। পাল্টা ফ্লেক্সও পড়েছে ‘গ্রামীবাসী’ উল্লেখেই। তাতে প্রশ্ন, বর্ষার ব্যানার শীতে কেন? ‘ভাগে’ কম হলে ‘সেটিংয়ে’ বসার ‘পরামর্শ’ও রয়েছে।
পঞ্চায়েত প্রধান শেখর সাঁপুইয়ের দাবি, নিকাশি বন্ধ করে গুদাম তৈরির কথা জানতেন না। ফ্লেক্সের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থা সচল রাখতে শীঘ্রই ওই দুই সংস্থাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতেবলা হবে।’’
গুদাম কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি, নিকাশির জন্য জায়গা রাখা আছে। সীমানা সম্পূর্ণ চিহ্নিত না হওয়ায় তা করা যায়নি। পঞ্চায়েতের অনুমোদন অনুযায়ীই কাজ হবে। কেন ‘বাধা সৃষ্টি’ করা হচ্ছে, তাঁরা বুঝতে পারছে না। প্রয়োজনে তাঁরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হবেন। তাঁদের অভিযোগ, আইন মেনে কাজ করা সত্ত্বেও আগেও কাজে বাধা দেওয়া হয়েছিল। প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সমস্যা মেটে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিভিন্ন গুদাম ও কারখানা নিজেদের জমি ইচ্ছেমতো উঁচু করে চৌহদ্দি পাঁচিলে ঘেরাতেই বিপর্যস্ত নিকাশি। বছরভর জল জমে থাকছে। বড়বেলু, ছোটবেলু, পাঞ্জাবিবাগান, বাগপাড়া, বৈদ্যপাড়া, মিল্কি, মুসলিমপাড়া, কলতলা রাজবংশীপাড়ার মানুষজন দুর্ভোগে পড়েন। বড়বেলুর একাংশের মানুষকে বারো মাস শোলার ভেলায় যাতায়াত করতে হয়। গত ৪-৫ বছর ধরে জলযন্ত্রণা সইতে হচ্ছে। মাঠের সীমানা খাল, শ্রীরামপুর-চণ্ডীতলা রোডের কালভার্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বড়বেলু মাকালতলার দীপা রায়, ললিতা ঝাঁয়ের কথায়, ‘‘প্রায় পঁচিশ বছরের বাস। গুদাম হওয়ার পর থেকেই সামান্য বৃষ্টিতে বাড়িতে জল ঢুকে যায়। সাপের উপদ্রবে থাকা দায়। প্রশাসন বা গুদাম কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে কিছু না হওয়ায় প্রতিবাদে নেমেছি।’’
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তথা উপপ্রধান নিমাই মণ্ডল বলেন, ‘‘দুই গুদাম মিলে পঞ্চায়েতের অধিকাংশ অঞ্চলের নালা বন্ধ করে দিচ্ছে। সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা করেনি। গুদাম, কারখানা হোক নিকাশি বাঁচিয়ে।’’
বাদামতলার কৃষক ওসমান মল্লিক জানান, তাঁর ১৫ বিঘা জমির মধ্যে ৫ বিঘা তিন ফসলি ছিল। বেহিসাবি ভাবে গুদাম তৈরির কারণে জল না সরায় জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘বাধ্য হয়ে প্রতিবাদে নেমেছি। সুষ্ঠু নিকাশি ব্যবস্থা চাই, যাতে চাষ করে দু’মুঠো খেতে পারি।’’ চাষিদের আশঙ্কা, যে হারে এবং পদ্ধতিতে গুদাম তৈরি হচ্ছে, চাষ উবে যাওয়া কার্যত সময়ের অপেক্ষা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy