উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে ৬০০-র মতো সরকারি বাস চলাচল করে। প্রয়োজন আরও অন্তত ২০০ বাসের। —ফাইল চিত্র।
পর্যাপ্ত চালক নেই। যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের অনেককেই বাড়তি সময় গাড়ি চালাতে হয়। এমনকি, বাসের সংখ্যাও কম। যার জেরে দিনের বিভিন্ন সময়ে সরকারি বাসের অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। রাজ্যের উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে সরকারি গণপরিবহণ ব্যবস্থার হাল এমনই।
প্রশাসনিক বৈঠকে বৃহস্পতিবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসের অভাবে যাত্রীদের অপেক্ষায় থাকা নিয়ে। এমনকি পরিবহণ দফতরকে ‘নীরবে থাকা দফতর’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বিমানবন্দর থেকে ফেরার পথে রাস্তায় বাসের অপেক্ষায় লোকজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেই ওই দিন মুখ্যমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করেন বলে খবর।
কিন্তু বাস্তব এটাই যে, উন্নত মানের সরকারি গণপরিবহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো ও কর্মীর অভাব রয়েছে পরিবহণ দফতরে। এমনই দাবি দফতরের আধিকারিকদের একাংশের। তাঁরা জানান, রাস্তায় সরকারি বাসের পরিষেবা সুলভ করতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক বাস এবং চালক-কন্ডাক্টরের অভাব রয়েছে। তা-ও কিছু রুটে ট্রিপের সংখ্যা বাড়িয়ে পরিষেবা সক্রিয় রাখার চেষ্টা চলছে। তবে সরকারি বাস রাস্তায় নামলেও পরিষেবার খামতি থেকেই যায় বলে দাবি দফতরের আধিকারিকদের একাংশের।
দফতর সূত্রের খবর, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গ মিলিয়ে ৬০০-র মতো সরকারি বাস চলাচল করে। প্রয়োজন আরও অন্তত ২০০ বাসের। ঘাটতি মেটাতে ৮০টি রুটে ট্রিপের সংখ্যা বাড়িয়ে পরিষেবা সহজলভ্য করার চেষ্টা চলছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘চালকদের শারীরিক কারণে বাড়তি সময় গাড়ি চালানোর জন্য জোর করা যায় না। তা সত্ত্বেও অনেকে বাড়তি সময় চালান। সেই জন্যেই অনেক রুটে ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো গিয়েছে।’’
পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী জানান, সরকারি বাসের পরিষেবা সুলভ করতে দফতর সচেষ্ট রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সরকার এবং পরিবহণ দফতর মানুষকে পরিষেবা দিতে বদ্ধপরিকর। সরকারি বাসের পরিষেবার উন্নতির জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা হচ্ছে। দ্রুত কয়েকটি সমস্যার সমাধান করা হবে।’’
সূত্রের খবর, সরকারি বাসের পরিষেবার মানোন্নয়নে অনেক দিন ধরেই নতুন বাস কিনতে চাইছে পরিবহণ দফতর। এ নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে
দফতরের। নতুন করে বাসচালক ও কন্ডাক্টর নিয়োগ নিয়েও কথাবার্তা হচ্ছে। এই নিয়োগ নিয়ে সরকার ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা।
সূত্রের খবর, প্রায় দেড় দশক আগে জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের আওতায় একাধিক বাস কিনেছিল রাজ্য সরকার। সেই সব বাস
এখনও রাস্তায় চলছে। দূষণ আইনে বহু বাস বাতিল হয়ে গিয়েছে পনেরো বছর অতিক্রম হওয়ার পরে। এখনও যে সব বাস চলছে, সেগুলিও পনেরো বছর পার হওয়ার পথে। একই সঙ্গে বাসচালকদের বেতন সংক্রান্ত নানা সমস্যা থাকায় তাঁদের একাংশ মন দিয়ে কাজ করেন না বলে অভিযোগ। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, সরকারি বেতনভুক চালকের চেয়ে এজেন্সির দ্বারা নিযুক্ত এবং চুক্তিভিত্তিক চালকের সংখ্যাই এখন বেশি। অনেক ক্ষেত্রেই বাস বিকল হয়ে গেলে ডিপোয় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এমনকি, সময় মতো যন্ত্রাংশ বদল করাও যায় না। যে কারণে কোনও কোনও ডিপোয় নির্ধারিত সংখ্যার গাড়ি থাকা সত্ত্বেও
ততগুলি বাস আদতে চলে না। এমন সব একাধিক বিষয় রাস্তায় সরকারি বাসের অভাবের কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy