মিড ডে মিলে বরাদ্দ বৃদ্ধি নিয়ে খুশি নয় স্কুলগুলি। বেশিরভাগ স্কুল কর্তৃপক্ষেরই দাবি, সামান্য বৃদ্ধিতে কাজের কাজ কিছুই হবে না। এমনিতেই কম বরাদ্দে মিড ডে মিল চালাতে হিমসিম খাচ্ছে বহু স্কুল। পরিস্থিতি সামাল দিতে মিড ডে মিলের খাবার কমিয়ে দিয়েছে কেউ কেউ। কেউ আবার সপ্তাহে ছ’দিনের বদলে পাঁচদিন খাবার দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় মহিলা পরিচালিত স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি মিড ডে মিল পরিচালনা করে। কিন্তু খরচ সামাল দিতে না পেরে অনেক স্বনির্ভর গোষ্ঠীই সেই দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ।
নামখানা নারায়ণ বিদ্যামন্দির স্কুলে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ৮০০ ছাত্রছাত্রীকে মিড ডে মিল দেওয়া হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক তমালকান্তি পণ্ডা বলেন, “সমস্ত ছাত্রছাত্রী প্রতিদিন উপস্থিত থাকে না। যারা থাকে না, তাদের বরাদ্দ উপস্থিত পড়ুয়াদের ভাগ করে দেওয়া হয়। এ ভাবেই সামাল দেওয়া হচ্ছে। সরকার যে পরিমাণ বরাদ্দ বাড়িয়েছে, তা খুবই নগণ্য।”
নামখানার বকুলতলা মোহনগোপাল স্মৃতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ১৩৩। ওই স্কুলে মিড ডে মিল পরিচালনার দায়িত্বে ছিল একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। কিন্তু ‘সীমা’ নামে ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠী দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, মিড ডে মিল চালাতে যা খরচ হচ্ছিল, সেই টাকা পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই দায়িত্ব ছাড়তে হয়েছে।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপককুমার খাঁড়া বলেন, “আমাকেই দায়িত্ব নিয়ে মিড ডে মিল চালাতে হয়। প্রতিদিন স্কুলে ৯০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী উপস্থিত থাকে। এত কম টাকায় এত পড়ুয়ার খাবার জোগাড় করতে সপ্তাহের শেষ দিন মাঝে মধ্যে মিড ডে মিল বন্ধ করে দিতে হয়।”
তিনি আরও বলেন, “বাজারে একটা ডিমের দাম ৬ টাকা। কিন্তু পড়ুয়া পিছু মিড ডে মিলে বরাদ্দ ৬ টাকারও কম। অর্থাৎ ওই টাকায় রোজ একটা ডিমও খাওয়ানো সম্ভব নয়। সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। অথচ এই সব দিকে নজর দিচ্ছে না।”
নামখানার হরিপুর গদাধর বিদ্যাপীঠ স্কুলে মিড ডে মিল খায় ৪২৯ জন পড়ুয়া। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রহ্লাদচন্দ্র ঘোড়ুই বলেন, “মহিলাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী স্কুলে মিড ডে মিল পরিচালনা করে। কিন্তু এই টাকায় নির্ধারিত মেনু অনুযায়ী খাবার দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে মেনুতে কাটছাঁট করতে হয়। কোনও কোনও দিন পরিমাণেও কম খাবার মেলে। তা নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা অভিযোগও জানায়।” তাঁর অভিযোগ, “সরকার যা বরাদ্দ বাড়িয়েছে, তাতে কিছুই হবে না। মনে হচ্ছে যেন ভিক্ষে দিচ্ছে। কোটি কোটি টাকা খরচ করে মূর্তি বসছে, অথচ দেশে অপুষ্টির হার বাড়ছে। যারা আগামী দিনে দেশের ভবিষ্যৎ, তাদের কথা সরকার চিন্তা করছে না। এমন চলতে থাকলে আমাদের দেশ অপুষ্টির তালিকায় শীর্ষে পৌঁছে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy