বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রীর। নিজস্ব চিত্র।
পূর্ণিমার কটাল ও নিম্নচাপের বৃষ্টির জেরে প্লাবিত হয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। তার উপর বাঁধ ভেঙে নোনাজলে প্লাবিত হয় বিঘার পর বিঘা চাষ জমি। সেই জমিতেই চাষের জন্য এ বার কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নোনাস্বর্ণ ধান। এই ধান নোনা পরিবেশেও ভাল ফলন দিতে সক্ষম বলে আশাবাদী কৃষি আধিকারিকেরা।
শনিবার, দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরের ধসপাড়া সুমতিনগর-২ পঞ্চায়েতের বঙ্কিমনগরে জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা-সহ প্রশাসন এবং সেচ ও কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ওই এলাকার এক নম্বর কলোনি কার্যত জলের তলায়। বহু পরিবার ঘরছাড়া, চাষের জমিতেও নোনাজল ঢুকেছে। প্রশাসনের দাবি, এলাকার প্রায় ১০০ বিঘা চাষজমিই নোনা জলে প্লাবিত। ফলে ওই এলাকার সমস্ত চাষের জমিতে সাধারণ মানের ধানচাষ সম্ভব নয়। তাই এই এলাকার কৃষকদের নোনাস্বর্ণ ধান চাষ করার পরামর্শ দেন কৃষি আধিকারিকরা। এলাকায় ৭০ জন কৃষকের হাতে সেই ধানের বীজ তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি তাঁদের চাষের প্রশিক্ষণও দেবে কৃষি দফতর।
জানা গিয়েছে, নোনাস্বর্ণ ধানের তালিকায় রয়েছে লুনা, সুবর্ণ, লুনিশ্রী, ক্যানিং-৭, হ্যামিল্টন ও দুধেশ্বরের মতো বেশ কয়েকটি প্রজাতির ধান। এই ধানগুলি মূলত লবণ সহনশীল ধানের হিসেবে পরিচিত। প্রথমে মিষ্টি জলের কাদায় ধানের বীজতলা তৈরি হয়। পরে তা লবণাম্বু পরিবেশে রোপণ করা যেতে পারে। রোপণের দেড়শো দিনের মধ্যেই ধান কাটার উপযুক্ত হয়ে যাবে।
সামনেই কটালে কি পরিস্থিতি হয় তা দেখার পরই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের হাতে নোনাস্বর্ণ ধান তুলে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে বঙ্কিম বলেন, ‘‘আমফান, ইয়াসের পর পরীক্ষামূলক ভাবে এই নোনাস্বর্ণ ধান আমরা কৃষকদের বিতরণ করেছিলাম। এ বারও নোনাজলে প্লাবিত জমিতে চাষের জন্য সেই ধান দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’ এ বিষয়ে সাগর ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা বিবেকানন্দ বাগ বলেন, ‘‘নোনাস্বর্ণ ধান সফল ভাবে নোনা পরিবেশে চাষ সম্ভব। তাই সুন্দরবনের কৃষকদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তাঁরা পুনরায় জমিতে ধান চাষ করতে পারবেন। প্রয়োজনে তাঁদের প্রশিক্ষণও দেওয়ার ভাবনা রয়েছে।’’
অন্য দিকে, শনিবার নদী ভাঙনের জেরে জল ঢুকেছে বাসন্তীর রাধাবল্লভপুর গ্রামে। হোগোল নদীর বাঁধে প্রায় ৮০০ মিটার ভাঙন দেখা দেয়। হু-হু করে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করলে সেচ দফতরের কর্মীরা বাঁধ মেরামতির কাজে নামেন। বালির বস্তা ও অন্যান্য সামগ্রী দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ আটকানো হয়। কোটালের জেরে নদীর ঢেউয়ের ঝাপটায় এই বিপত্তি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন এলাকার বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘জল ঢুকে যাওয়ায় অনেক পরিবারের সমস্যা হয়েছে। তবে প্রশাসনিক তৎপরতায় বেশি ক্ষতি হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy