বেহাল: এমনই দশা বাসন্তীর একটি বিদ্যালয়ের শৌচাগারের। নিজস্ব চিত্র
এখনও শিয়রে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। স্কুল কবে খোলা হবে, তা নিয়ে আলোচনা-বিতর্ক বিস্তর। রাজ্য ইতিমধ্যে স্কুল খোলার ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ছেলেমেয়েদের পা পড়েনি স্কুলে। কী অবস্থায় আছে পরিকাঠামো, তার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শেষলগ্নে সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। স্কুল খোলার পরিস্থিতি নিয়ে সরকারি নির্দেশ মতো ক্যানিং মহকুমার সমস্ত স্কুল রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেখানে উঠে এসেছে নানা সমস্যার কথা। কোথাও শৌচালয়ের দরজা ভাঙা। কোথাও চেয়ার-বেঞ্চের হাল খারাপ। মাঠে আগাছা জন্মেছে।
ক্যানিং মহকুমায় জুনিয়র হাইস্কুল, হাইস্কুল ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা ১৩৫টি। এ ছাড়া, দু’টি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত ইন্ট্রিগ্রেটেড স্কুল ও দু’টি সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মডেল স্কুল রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকার কারণে প্রায় সব স্কুলেই কিছু না কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। স্কুল চত্বর আগাছায় ভরে গিয়েছে অনেক জায়গায়। পানীয় জলের টিউবওয়েল বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। শৌচালয় থেকে শুরু করে ক্লাসরুমের জানলা-দরজা ভাঙা অবস্থায়ও রয়েছে বহু স্কুলে। আমপান ও ইয়াসের জেরে বহু স্কুলের ছাউনি নষ্ট হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্কুলগুলি চালু করতে গেলে সেগুলিকে মেরামতির প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষ।
স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে প্রতিটি স্কুলের বর্তমান পরিস্থিতি কী, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। মেরামতির জন্য কত টাকা খরচ হতে পারে, সেই হিসেবও চাওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই স্কুলের তরফে সেই হিসেব পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষকেরা।
ক্যানিং ডেভিড সেশুন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণকুমার ভগত বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুল চত্বর আগাছায় ভরে গিয়েছে। বহু বেঞ্চ ভেঙে পড়ে আছে। টিউবওয়েল অব্যবহারের ফলে খারাপ হয়ে পড়েছে। শৌচালয়গুলিও বেহাল।” এই স্কুলের বর্তমান যা অবস্থা স্কুল খুলতে গেলে আনুমানিক ১০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন বলে স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে।
বাসন্তীর ঋতুভকত হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অম্বরীশ দত্ত বলেন, ‘‘ইয়াসে স্কুলের বহু ঘরের ছাউনি উড়ে গিয়েছে। ক্লাসঘরের জানলা-দরজা ভেঙে রয়েছে। শৌচালয়, পানীয় জলের টিউবওয়েলও খারাপ। আগাছায় স্কুল চত্বর ভরে গিয়েছে। ২৯০০ পড়ুয়াকে নিয়ে স্কুল খুলতে গেলে এই মুহূর্তে বহু মেরামতি প্রয়োজন।” এ জন্য প্রায় ৭ লক্ষ টাকা খরচ হতে পারে বলে জানানো হয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতরের কাছে।
একই অবস্থা তালদি সুরবালা শিক্ষায়তন ফর গার্লসের। প্রধান শিক্ষিকা লিপি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘খেলার মাঠ থেকে শুরু করে সর্বত্রই আগাছা জন্মেছে। শৌচালয়ের দরজা-জানলা ভাঙা। বেঞ্চ ভাঙা। পানীয় জলেরও সমস্যা রয়েছে। বেশ কয়েকটি ঘরের ছাউনি ভেঙে পড়েছে।” প্রায় ৬ লক্ষ টাকা মেরামতের জন্য জন্য জরুরি বলে জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া, সুন্দরবনের প্রায় সব স্কুলেই একই অবস্থা। নদী তীরবর্তী স্কুলগুলির বেশিরভাগেরই ছাউনি নেই। টানা একমাস ধরে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পগুলিও স্কুল চত্বরে হয়েছে। অন্য দিকে, ইয়াস বা অতিবৃষ্টির ফলে বহু মানুষ সুন্দরবনের নদী তীরবর্তী স্কুলগুলিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই স্কুলগুলিকে ভাল ভাবে স্যানিটাইজ় করতে হবে বলেও জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষকেরা। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রদ্যোৎ সরকার বলেন, “স্কুল খোলার জন্য সরকার নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy