পাকড়াও। আদালতের পথে রফিকুল। ফাইল চিত্র
ক্যানিংয়ের গ্রামে পঞ্চায়েত সদস্য-সহ তিনজনকে খুনে মূল অভিযুক্ত রফিকুল সর্দার আপাতত পুলিশি হেফাজতে। তাকে প্রাথমিক জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, এলাকা দখলের কারণেই খুন।
তদন্তকারীদের দাবি, গোপালপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য স্বপন মাঝিকে পথ থেকে সরানোই ছিল রফিকুলের মূল লক্ষ্য। স্বপনের সঙ্গে রেষারেষি তার। এলাকায় ঢুকতে পারছিল না রফিকুল। পুলিশের দাবি, জেরায় রফিকুল জানিয়েছে, এলাকায় ঢুকলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছিল স্বপন।
এ দিকে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এলাকায় ঢুকতে না পারলে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে পারছি না রফিকুল। পুলিশের দাবি, কার্যত সেই রাগেই স্বপনকে খুনের পরিকল্পনা করে রফিকুল। কয়েকজন সাগরেদকে নিয়ে ৭ জুলাই, ঘটনার দিন নারায়ণতলা এলাকায় একটি চায়ের দোকানের সামনে অপেক্ষা করছিল সে। তার কাছে খবর ছিল, স্বপন কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই পথ দিয়ে হেড়োভাঙায় দলীয় কার্যালয়ে যাবেন। তবে দুই সঙ্গীও আছেন স্বপনের সঙ্গে, সে কথা জানত না রফিকুলেরা।
স্বপনের উপরেই প্রথমে আক্রমণ করে আততায়ীরা। তিনজন রাস্তায় পড়ে যান। তাঁদের গুলি করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় সকলকে।
ঘটনার পরে গা ঢাকা দেয় রফিকুল ও তার সঙ্গীরা। সূত্রের খবর, প্রথমে রফিকুল-সহ সকলেই বারুইপুর থানা এলাকার সালেপুরের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল।
এলাকায় লাগাতার পুলিশি তল্লাশির জন্য সপ্তাহখানেক পরে কেরলে পালিয়ে যায় রফিকুল। বাকিরা ছড়িয়েপরে নানা জায়গায়।
পুলিশি জেরায় রফিকুল জানিয়েছে, সালেপুরে থাকাকালীন প্রতিরাতে বাগানে ঘুমাতো সে। ঝোপের মধ্যেও রাত কাটিয়েছে। কেরলে গিয়েও প্রথম প্রথম বাইরে খুব একটা বেরোত না। মোবাইল ব্যবহার করত না। যে কারণে পুলিশেরও সময় লাগে তাকে খুঁজে বের করতে।
রফিকুলের সঙ্গে ছিল হাজার পনেরো টাকা। তা শেষ হয়ে যেতেই বাড়িতে যোগাযোগ করে রফিকুল। অন্যের ফোন থেকে ছেলেকে ফোন করে টাকা পাঠাতে বলে। এলাকায় দিনমজুরের কাজও জুটিয়ে নেয় ততদিনে।
ইতিমধ্যে অন্য একজনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠায় রফিকুলের ছেলে। সেই সূত্র ধরেই ক্লু আসে পুলিশের হাতে। কেরলে হানা দেয় বারুইপুর জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও ক্যানিং থানার পুলিশের যৌথ দল। ধরা পড়ে রফিকুল। তবে আরও চার অভিযুক্ত এখনও ফেরার। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এর আগেও একাধিক খুনের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে রফিকুলের। ঢোসা বাজারের কাছে সাগরেদদের নিয়ে বসে পথচলতি মহিলাদের কটূক্তি করা, অশালীন ব্যবহারেরও অভিযোগ ছিল। এলাকায় চুরি, ছিনতাই-সহ নানা অসামাজিক কাজে নানা সময়ে নাম জড়িয়েছে তার।
কয়েকমাস আগে ঢোসা বাজারের কাছে দলীয় কার্যালয় গঠন করেন স্বপন। তারপর থেকে ওই এলাকায় দাপট কমতে শুরু করেছিল রফিকুলের। রফিকুলকে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলেন স্বপন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy