Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

ঝামেলা এড়াতে পদত্যাগ অধ্যক্ষের

ভর্তির সময় অধ্যক্ষের পদত্যাগে কলেজে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিশ্বরূপবাবু বলেন, ‘‘অসুস্থতা নিয়েও কলেজ চালাচ্ছিলাম। কিন্তু টাকা না থাকার সমস্যায় আমাকেই বলি হতে হচ্ছে।’’

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঢোলাহাট শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০১:৩১
Share: Save:

কলেজের উন্নয়ন তহবিলে টাকা না থাকায় অস্থায়ী অধ্যাপকেরা প্রায় ন’মাস বেতন পাননি। এ জন্য বিক্ষোভের মুখে পড়ছিলেন অধ্যক্ষ। ঝামেলা এড়াতে শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করলেন ঢোলাহাট কলেজের অধ্যক্ষ বিশ্বরূপ সাহা।

ভর্তির সময় অধ্যক্ষের পদত্যাগে কলেজে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিশ্বরূপবাবু বলেন, ‘‘অসুস্থতা নিয়েও কলেজ চালাচ্ছিলাম। কিন্তু টাকা না থাকার সমস্যায় আমাকেই বলি হতে হচ্ছে।’’ বার বার ঘেরাও, তালাবন্দি হয়ে দীর্ঘক্ষণ থাকতে হচ্ছে বিশ্বরূপবাবুকে। অসুস্থ শরীরে এ সব আর সহ্য হয় না বলে তিনি জানান। বছর দু’য়েক আগে কলকাতার রামমোহন কলেজ থেকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়ে এই কলেজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সোমবার পদত্যাগ করেন।

কলেজ পরিচালন সমিতি, জিবির সভাপতি কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার বলেন, ‘‘অন্য সমস্যার কথা উনি পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেননি। অসুস্থতার কথা বললে আর কী বলব? অন্য শিক্ষকরা কেউ অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। জিবির পরবর্তী বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ঠিক করা হবে।’’ এ দিকে অধ্যক্ষ জানান, কলেজের ঝামেলা নিয়ে বার বার বিধায়কের কাছে সাহায্য চেয়েও তিনি পাননি। টাকা না থাকার সমস্যা বুঝেও শিক্ষকদের মাইনে কোথা থেকে হবে তার দায় অধ্যক্ষের ঘাড়েই চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। কলেজের উন্নয়ন তহবিল থেকেই অস্থায়ী শিক্ষকদের বেতন হয়। সেই ভার অধ্যক্ষের বহন করার কথা নয়।

যদিও যোগরঞ্জনবাবুর দাবি, কলেজের সব বিষয়ে তিনি হস্তক্ষেপ করেন না। তহবিল আনার জন্য যাবতীয় দৌড়ঝাঁপ তো অধ্যক্ষকেই করতে হয়। ছাত্রদের ফি-র বাইরে কোনও টাকাই নেই কলেজের উন্নয়ন তহবিলে। কিন্তু কলেজে ১২ জন অতিথি এবং চুক্তিভিত্তিক অধ্যাপক রয়েছেন। তাঁরা বেতন পাচ্ছেন না। এর আগেও বেশ কয়েকবার তাঁদের বেতন আটকে যাওয়ার জন্য অধ্যক্ষ ঘেরাও হয়েছিলেন।

গত কয়েক মাস আগে একই কারণে কলেজের শিক্ষকরাই তালাবন্দি করে রেখেছিলেন অধ্যক্ষকে বলে অভিযোগ। পরে কুলপির বিডিও গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। ছাত্র বিক্ষোভেও গত বছর কলেজে পুলিশ গিয়েছিল। অস্থায়ী শিক্ষকদের নেতা মেহবুব পিয়াদা বলেন, ‘‘৯ মাস থেকে বেতন পাইনি। আমাদের সহকর্মী সুকমল জানার বাবা মারা গিয়েছিলেন, তাঁর টাকার প্রয়োজন ছিল। তারপরেও অনেকদিন দাবি মেটেনি বলেই ঘেরাও করা হয়েছিল।’’

কলেজ সূত্রে খবর, ওই কলেজে স্থায়ী শিক্ষক মাত্র ৪ জন। কলেজের পড়াশোনা চলছেই অস্থায়ী শিক্ষকদের উপর। অতিথিরা মাসে মাত্র ২ হাজার, চুক্তিভিত্তিকরা মাসে ৩ হাজার টাকায় পড়ান। স্থানীয় সূত্রের খবর, আশ্বাস দিলেও, গত কয়েক বছরে নিজের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে এক টাকাও কলেজে দেননি বিধায়ক যোগরঞ্জনবাবু।

এমনিতে কলেজের পরিকাঠামোতে অনেক ত্রুটি রয়েছে বলে জানান পড়ুয়ারা। তার মধ্যে অধ্যক্ষ পদত্যাগ করলেন। এরপর আবার কী হয় তা ভেবেই এখন চিন্তিত পড়ুয়ারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Principal Dholahat College Resigned
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE