Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
ক্যারাটের আন্তর্জাতিক স্তরে সাফল্য বসিরহাটের তরুণের

আধপেটা খেয়ে লড়াই চালিয়েছেন ওহিদ

ক্যারাটে নিয়ে উৎসাহিত হলেন কী ভাবে? ওহিদ জানান, পথে এক তরুণীকে কিছু দুষ্কৃতী উত্যক্ত করছিল। সে সময়ে মনে হয়, ক্যারাটে জানলে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া যেত দুষ্কৃতীদের। তারপর থেকেই ‘দুষ্টের দমন’ মাথায় রেখে তালিম নিতে ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শুরু করেন ওহিদ।

পরিবারের সঙ্গে জয়ী তরুণ। নিজস্ব চিত্র

পরিবারের সঙ্গে জয়ী তরুণ। নিজস্ব চিত্র

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৫০
Share: Save:

আন্তর্জাতিক স্তরের ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতল বসিরহাটের বছর বাইশের তরুণ মহম্মদ ওহিদ গাজি। ডিসেম্বরে হায়দরাবাদে ওই প্রতিযোগিতা হয়। যেখানে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের পরাজিত করেন বসিরহাটের দণ্ডিরহাটের ওহিদ। ওহিদ জানান, দুই শিক্ষকের জন্য ‘ক্যারাটে বুডোকান ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া’র প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে পেরে তিনি গর্বিত।

তবে ওই যুবকের এখন একটাই চিন্তা, অভাবের সংসারে কী ভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ক্যারাটের প্রশিক্ষণ ধরে রাখা যায়।

ক্যারাটে নিয়ে উৎসাহিত হলেন কী ভাবে? ওহিদ জানান, পথে এক তরুণীকে কিছু দুষ্কৃতী উত্যক্ত করছিল। সে সময়ে মনে হয়, ক্যারাটে জানলে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া যেত দুষ্কৃতীদের। তারপর থেকেই ‘দুষ্টের দমন’ মাথায় রেখে তালিম নিতে ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শুরু করেন ওহিদ।

অনন্তপুরের মহম্মদ আরিজুল আলির কাছে ক্যারাটের হাতেখ়ড়ি। কয়েক মাস শেখার পরে টাকির ইউনাইটেড ক্লাবে বাকি বিল্লা গাজির প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যান ওহিদ। তখন তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলায় এমএ পড়ছেন। পড়াশোনার সঙ্গেই ক্যারাটের প্রশিক্ষণ চালিয়ে গিয়েছেন।

ধীরে ধীরে রাজ্য, দেশের নানা জায়গায় ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়াও শুরু করেন ওই তরুণ। বছর দু’য়েকের মধ্যে সাতটি বেল্ট জয় করেন। রাজ্য পর্যায়ে তিনটি পুরস্কারও পান। ওহিদের বাবা রশিদ গাজি চাষবাস করেন। মা তসলিমা বিবি সংসার সামলান। ওহিদরা চার ভাইবোন। টিউশন পড়িয়ে, লোকের দোকানে কাজ করে ওহিদ নিজের ও ভাইবোনদের পড়াশোনা চালিয়েছেন। ক্যারাটে শেখার টাকাও এ ভাবেই জোগাড় করেছেন। রশিদ জানালেন, যতটুকু সাফল্য, তা নিজের চেষ্টাতেই পেয়েছে ছেলে। এক সময়ে সকলেই বলেছিল, পড়াশোনা ছাড়িয়ে দিয়ে খেলা বন্ধ করে কাজে পাঠাতে। কিন্তু চ্যালেঞ্জটা নিয়েছিলেন ওহিদ।

ছেলে সোনার পদক গলায় ঝুলিয়ে বাড়ি ফেরায় গর্বিত রশিদ-তসলিমা। তাঁদের কথায়, ‘‘এক বেলা আধপেটা খাবার খেয়েও কখনও দমেনি ছেলেটা। মনের জোর ছিল। তা দিয়েই লড়ে গিয়েছে।’’ ওহিদের কথায়, ‘‘আমি লড়তে ভালবাসি। লড়াই করেই জীবনের সব কিছুতে জয়ী হতে চাই।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy