ধৃত: আইজুল মণ্ডল ও সরিফা বিবি। নিজস্ব চিত্র
বাদুড়িয়ায় বৃদ্ধাকে গলার নলি কেটে খুনের অভিযোগে নাতি এবং নাতবৌকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
সোমবার রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় কান ও গলার নলি কেটে খুন করা হয় বাহাত্তর বছরের শুকজান বেওয়াকে। মঙ্গলবার সকালে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। বৃদ্ধার প্রথম পক্ষের মেয়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ শুকজানের নাতি আইজুল মণ্ডল এবং তাঁর স্ত্রী সরিফা বিবিকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের বুধবার বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
দশ-বারো বছরে ওই বাড়িতে এই নিয়ে এক শিশু-সহ মোট চারজন খুন হলেন। আগের তিনটি খুনের ক্ষেত্রে শুকজানের নামে অভিযোগ উঠেছিল। জেলও খাটতে হয়। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন।
কিন্তু শুকজান খুন হলেন কেন?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাদুড়িয়ার জগন্নাথপুর গ্রামে থাকতেন দেওয়ান আলি মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী শুকজান। দু’জনেরই দু’টি করে বিয়ে। বছর পাঁচেক আগে দেওয়ানের মৃত্যুর পরে নাতি আইজুলের কাছে থাকতেন শুকজান। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৃদ্ধার কয়েক কাঠা জমির উপরে ভিটে বাড়ি ছাড়াও জগন্নাথপুর গ্রামে আরও তিন কাঠা জমি আছে। সম্প্রতি সেই জমি বিক্রির জন্য ৫০ হাজার টাকা পেয়েছেন শুকজান। সেই টাকার ভাগ এবং ভিটেবাড়ির ভাগ চেয়েছিল নাতি-নাতবৌ। অভিযোগ তা নিয়ে শুকজানের সঙ্গে তাঁদের ঝামেলা চলছিল।
পুলিশের দাবি, শুকজান চাইছিলেন জমি বিক্রির অগ্রিম এবং রেজিস্ট্রির পরে যে টাকা পাবেন, তার সবটাই তিনি দেবেন প্রথম পক্ষের মেয়েকে। তা জানতে পেরে খেপে উঠেছিল নাতি-নাতবৌ। পড়শিদের থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল চরমে পৌঁছেছিল। কয়েক দিন বৃদ্ধাকে খেতে পর্যন্ত দেয়নি নাতি-নাতবৌ।
আইজুল ও সরিফাকে আটক করে পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, জেরার মুখে বৃদ্ধাকে খুনের কথা স্বীকার করে তারা। আইজুল ও সরিফা পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, সম্পত্তির লোভে আগে তিনজনকে খুন করেছিলেন শুকজান। এ সব জানা সত্ত্বেও বৃদ্ধার দেখভাল করতেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছিলেন শুকজান। বাস্তু জমি, গ্রামে আরও কয়েক লক্ষ টাকার জমি— কিছুই নাতিকে দিতে রাজি ছিলেন না শুকজান। পুলিশের দাবি, আইজুলর স্বীকার করেছেন, এই রাগেই শুকজানকে খুনের চক্রান্ত করেন। রাতে ঘুমের মধ্যে কাস্তে দিয়ে কান ও গলার নলি কেটে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy