উদ্ধার হওয়া বাইক। ছবি: সুজিত দুয়ারি
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে চলা আন্তর্জাতিক বাইক পাচার চক্রের এক পাণ্ডা সহ ২ জন পাচারকারীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে মছলন্দপুর ফাঁড়ির পুলিশ স্থানীয় নিমতলা এলাকা থেকে তাদের ধরে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম মোক্তার মণ্ডল ও সান্তু মণ্ডল। মোক্তারের বাড়ি বাদুড়িয়ার ঘোষপুর এলাকায়। সে ওই চক্রের পাণ্ডা। সান্তু তার সঙ্গী। তার বাড়ি মছলন্দপুরের বেলেডাঙা এলাকায়। ধৃতদের কাছ থেকে দু'টি নম্বরহীন চোরাই বাইক এবং গুলি ভর্তি পাইপগান উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতেরা রাস্তায় থাকা নম্বরহীন বাইক টার্গেট করত। নম্বরযুক্ত বাইকও তারা চুরি করত। চুরি করে প্রথমেই বাইকগুলির থেকে নম্বর তুলে দিত। যাতে কেউ নিজের বাইক চিনতে না পারেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, চুরি করা বাইক তারা স্বরূপনগরের হাকিমপুর সীমান্ত দিয়ে পাচার করত। বাংলাদেশ থেকে পাচারকারীরা এসে তাদের কাছ থেকে বাইক নিয়ে যেত। একটি বাইক বিক্রি করে ৩০ হাজার টাকা পেত। ধৃতদের বুধবার বারাসত জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মোক্তারের কাছে বিভিন্ন চাবি থাকে। সেই চাবি দিয়ে বাইকের লক খুলে বাইক নিয়ে পালায়। চুরি করা বাইক সীমান্ত এলাকায় গোপনে রেখে দিত। পরে সুযোগ বুঝে পাচার করত। বাংলাদেশে এ দেশের বাইকের ভাল চাহিদা আছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনের জেরে সীমান্তে বিএসএফ ও পুলিশ কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। ফলে গরু পাচার ও দু'দেশের মধ্যে বেআইনি মানুষ পারাপার কার্যত বন্ধ। তাই বেড়েছে বাইক পাচার।আংরাইল হাকিমপুর ও বাগদার সীমান্ত দিয়ে বাইক পাচার শুরু হয়েছে। সম্প্রতি বনগাঁ, বসিরহাট, বারাসত মহকুমাতে বাইক চুরির একাধিক ঘটনা ঘটেছে। দিন কয়েক আগে বনগাঁ থানার পুলিশ চোরাই বাইক-সহ পাচারকারীদের গ্রেফতার করেছে।
সম্প্রতি অশোকনগর থানার পুলিশ তিন পাচারকারীকে গ্রেফতার করে ১৬টি বাইক উদ্ধার করেছে। বাইক চোরদের সঙ্গে পাচারকারীদের যোগাযোগ আছে। বাইক চুরি করে চোরেরা ওই বাইক পৌঁছে দেয় পাচারকারীদের কাছে। এ দেশে বাইকের যা দাম তার দ্বিগুণ দামে বাংলাদেশের পাচারকারীদের কাছে বাইক বিক্রি করে তারা।চুরি হওয়ার পর বিভিন্ন পর্যায়ে চার হাত ঘুরে চোরাই বাইক পৌঁছয় পাচারকারীদের কাছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ ও বিএসএফের গতিবিধি দেখার জন্য পাচারকারীদের নিজস্ব লোকজন আছে। যদি তারা বোঝে সীমান্ত পাহারা তুলনায় একটু কম, তখনই তারা বাইক নৌকায় তুলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। আর যদি তারা দেখে সেটা সম্ভব নয়, তখন তারা বাইকের পার্স খুলে বস্তায় ভরে পাঠিয়ে দেয়। সীমান্ত লাগোয়া পাট খেতে চুরি করা বাইক লুকিয়ে রাখা হয়। সুযোগ বুঝে সেখান থেকে বাইক পাচার করা হয়। তা ছাড়া নদীতে কচুরিপানা থাকলে তারা বাইকের পার্টস কচুরিপানার তলায় লুকিয়ে রাখে।
রাস্তায় পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বাইক চোরেরা একবার সীমান্তে চলে আসে না। এখনও হাত ঘুরে পুলিশের তল্লাশির খবর নিয়ে তারা ধীরে ধীরে পৌঁছয়। এমনও প্রমাণ মিলেছে, পুলিশের চোখে ধুলো দিতে বাইক চোরেরা বাইকের পিছনে মহিলাদের নিজের স্ত্রী সাজিয়ে নিয়ে আসে। যাতে কেউ সন্দেহ না করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy