Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

জাল হলমার্ক, কাঁচরাপাড়ায় ধৃত ৩ তরুণী

সোমবার বিকেলে কাঁচরাপাড়ায় বমাল ধরা পড়ল তারা। একটি সোনার দোকানে একই কায়দায় গয়না কিনতে ঢুকেছিল তারা। তাদের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় গাড়ির চালককেও। ধৃতরা কলকাতা এবং হাওড়ার বাসিন্দা। তাদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, বেশ কয়েক মাস ধরে তারা এই কারবার চালিয়ে আসছে।

প্রতারক: ধৃত তরুণীরা।

প্রতারক: ধৃত তরুণীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৮
Share: Save:

দুধ-সাদা স্করপিয়ো। সওয়ার তিন তরুণী। বেশভূষা আধুনিক। উদ্দেশ্য, পুরনো সোনার গয়না বদলে নতুন গয়না কেনা।

গত কয়েক দিন ধরে কলকাতা এবং ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বেশ কিছু দোকানে এ ভাবে তারা গয়না কিনেছেও। যদিও দোকানের মালিকরা পরে আবিষ্কার করেছেন, হলমার্ক ছাপের আড়ালে পুরনো গয়নাগুলি আসলে ঝুটো।

তবে শেষরক্ষা হল না। সোমবার বিকেলে কাঁচরাপাড়ায় বমাল ধরা পড়ল তারা। একটি সোনার দোকানে একই কায়দায় গয়না কিনতে ঢুকেছিল তারা। তাদের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় গাড়ির চালককেও। ধৃতরা কলকাতা এবং হাওড়ার বাসিন্দা। তাদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, বেশ কয়েক মাস ধরে তারা এই কারবার চালিয়ে আসছে। ব্যারাকপুর আদালত তাদের তিন দিনের জন্য পুলি‌শি হেফাজতে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই তরুণীদের নাম শাহিনা বিবি, পায়েল শীল এবং দেবশ্রী দাশ। তাদের গাড়ির চালক সাদ্দাম হোসেন লস্কর। শাহিনা হাওড়ার শিবপুর কাজিপাড়া লেনের বাসিন্দা। সাদ্দাম ও তাই। পায়েলের বাড়ি টালিগঞ্জের বনমালী মণ্ডল লেন। দেবশ্রী থাকে বেলেঘাটা মেন রোডে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (জোন ১) কে কান্নন জানান, ধৃতরা আর কোথায় এমন প্রতারণা করেছে, তা জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার শাহিনেরা ব্যারাকপুরের একটি গয়নার দোকানে যায়। তারা বেশ কিছু পুরনো গয়না বদলে নতুন গয়না কিনতে চায়। পুরনো গয়নাগুলিতে হলমার্ক ছিল। এমনকী ওজন অনুযায়ী প্রতিটি গয়নার বিলও ছিল। ফলে দোকানের মালিকের তেমন সন্দেহ হয়নি। তারা সেই গয়না বদলে নতুন গয়না দিয়ে দেয়। পরে তারা পরীক্ষা করে দেখে সব গয়নাই ঝুটো। পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। এর পরেই সমস্ত গয়নার দোকানকে এই দলটির বিষয়ে সতর্ক করে পুলিশ।

তার পরদিনই পুলিশের জালে পড়ল তারা। তখন বিকেল। কাঁচরাপাড়ার একটি গয়নার দোকানে ঢুকে একই প্রস্তাব দেয় তাঁরা। তাঁদের গয়না এবং বিল দেখে সন্দেহ হয় দোকান মালিকের। পুলিশের সতর্কবার্তা মনে পড়ায় তাঁরা আর ঝুঁকি নেননি। নতুন গয়না দেখানোর আছিলায় তাদের আটকে রেখে বীজপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ তাদের চার জনকে থানায় নিয়ে আসে। জেরায় প্রতরণার কথা স্বীকার করতে রাতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। বীজপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার খবর আসে দমদম ক্যান্টনমেন্টেও দিন কয়েক আগে একই কায়দায় সোনার গয়না হাতিয়েছে তিন তরুণী।

নকল বিল তৈরি নিয়ে সন্দেহ না থাকলেও, নকল হলমার্ক ছাপ তারা কীভাবে বসাত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাদের দলে আরও সদস্য রয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। সোমবার রাতেই বীজপুর থানায় এক যুবক এসে নিজেকে ধৃত তরুণীদের একজনের স্বামী বলে পরিচয় দেয়। পরে সে নিজেকে ‘লিভ-ইন-পার্টনার’ বলে। পুলিশ তাকে জেরা করার তোড়জোড় করতেই পিঠটান দেয় সে। সে দলের সদস্য বলেই পুলিশ মনে করছে। তাদের ধরতে অভিযান শুরু করছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Police Teenager
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE