হেলমেট ছাড়া পাম্পেও লুকিয়ে চুরিয়ে মিলছে তেল। নিজস্ব চিত্র।
নামখানার প্রীতিশ মাইতি বা কাকদ্বীপের অশোক দাসদের কাছে কোনও উপায় নেই। প্রায় ৬ বা ৭ কিলোমিটার দূরে গিয়ে বাইকের তেল ভরে নিয়ে আসা এক বড় সমস্যা। সে কারণে স্থানীয় মুদিখানা বা চায়ের দোকান থেকেই পেট্রোল কিনে ভরতে হয় বাইকে।
শুধু তাঁরাই নয়, কাকদ্বীপের প্রত্যন্ত এলাকার বাইক চালকরাই নেহাত প্রয়োজন না পড়লে পাম্পমুখো হন না। তাই ‘হেলমেট ছাড়া তেল নয়’ নীতি কলকাতায় চালু করা গেলেও এই গ্রামাঞ্চলে চালু করার কোনও রাস্তাই দেখতে পাচ্ছেন না পাম্প মালিক থেকে শুরু করে বাইক আরোহীরা।
উকিলের হাটের বাসিন্দা চিরঞ্জিৎ কাঞ্জির বাইক দুর্ঘটনা ঘটেছিল অক্টোবরে। সে বার তাঁর হেলমেট ছিল না। মাথায় ৩৭টা স্টিচ পড়ার পর থেকে তিনি হেলমেট কিনেছেন। তিনি জানান, নামখানার দিকে গেলে অন্তত ৭ কিলোমিটার যেতে হয়। আর কাকদ্বীপে গেলে ৬ কিলোমিটার। তার আগে কোনও পাম্প নেই। সে কারণে এখানে অনেক দোকানেই বেআইনি ভাবে তেল বিক্রি হয়। সময় অসময় অনেককেই সেগুলি কিনতে হয়।
কাকদ্বীপ-সহ সাগর, নামখানা বা পাথরপ্রতিমার বিভিন্ন এলাকায় বেশির ভাগ বাইক বা স্কুটি চালকেরা পেট্রোল পাম্পেই আসেন না। যাঁরা আসেন তাঁদের বেশির ভাগের কাছেই হেলমেট থাকে না। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর পুলিশের কড়া নজর থাকা সত্ত্বেও সচেতন নন এই এলাকার মানুষ। কাকদ্বীপের একটি পেট্রোল পাম্পে এরকমই ছবি নজরে এল। স্কুটি চালিয়ে নির্দিধায় তেল নিয়ে চলে গেলেন একজন আরোহী। হেলমেট ছাড়াই এসেছিলেন তিনি। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি পেট্রোল পাম্পের মালিক।
কাকদ্বীপের একটি পেট্রোল পাম্পের মালিক অরুণ পাল বলেন, ‘‘এখানে যে গ্রাহকরা আসে তাঁদের বেশির ভাগেরই হেলমেট থাকে না। তাঁদের যদি তেল না দেওয়া হয় তা হলে কাস্টমার হারাতে হবে।’’
বেশিরভাগ পেট্রোল পাম্প মালিকদের দাবি, গ্রামাঞ্চলে এখনও এই নির্দেশের কথা অনেকেই জানেন না। সে কারণে প্রতিটি পাম্পে প্রথমে এই ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি করে নোটিস দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। একটি সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হোক তা না হলে কী ভাবে রাতারাতি এটা করা সম্ভব?
তা ছাড়াও কাকদ্বীপে প্রচুর নদী, খাড়ি রয়েছে, অনেক সময় ব্রিজের সমস্যায় অনেকে দ্বীপের বাইরে বাইক বের করেন না। সে ক্ষেত্রে ড্রামে করে তেল নিয়ে যেতে হয়, সে কারণে বেআইনি ভাবে পেট্রোল বিক্রি কী ভাবে আটকানো হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন পেট্রোল পাম্প মালিকেরা।
ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার কার্যকরি সমিতির সদস্য মানস অধিকারী বলেন, ‘‘এটা ভাল। কিন্তু বাস্তবায়িত করতে গিয়ে একটা সমস্যা হচ্ছে। এটা নিয়ে আগে রাজ্য সরকার, তেল সংস্থাগুলি এবং পেট্রোল পাম্প মালিকরাও ব্যাপক প্রচার করুক। তারপর চালু হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy