Advertisement
E-Paper

Raidighi: স্লুস গেট অকেজো হয়ে নোনাজলে ভাসছে এলাকা, দুর্ভোগে বাসিন্দারা

কৃষিজমি, ঘরবাড়ি ও মাছের পুকুরকে রক্ষা করতে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তৎকালীন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।

 ভোগান্তি: এই গেট খারাপ হয়ে থাকায় বাড়ছে সমস্যা। নিজস্ব চিত্র

ভোগান্তি: এই গেট খারাপ হয়ে থাকায় বাড়ছে সমস্যা। নিজস্ব চিত্র

দিলীপ নস্কর

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২২ ০৭:৩৫
Share
Save

অতিবৃষ্টিতে এলাকায় ঢুকে পড়ত নোনাজল। ক্ষতি হত খেত ও পুকুরের। এই দুর্দশা রোধ করতে তৈরি করা হয়েছিল ১০টি স্লুস গেট-বিশিষ্ট ‘ক্লোজার।’ কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এখন তা অকেজো হয়ে গিয়ে ভাসিয়ে দিচ্ছে রায়দিঘির রাধাকান্তপুর পঞ্চায়েত এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়দিঘির মণিনদীর পাশে রাধাকান্তপুর পঞ্চায়েত। প্রায় ২০০ ফুট চওড়া ওই নদীতে চর পড়ে প্রতি বর্ষায় এলাকা নোনাজলে প্লাবিত হত। কৃষিজমি, ঘরবাড়ি ও মাছের পুকুরকে রক্ষা করতে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন তৎকালীন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। এলাকায় বর্ষার মিষ্টি জল ধরে রেখে দোফসলি চাষে উৎসাহ দিতে মথুরাপুর ২ ব্লকের রাধাকান্তপুর পঞ্চায়েতের রাধাকান্তপুর, নারায়ণীপুর ও মণিরতট গ্রামের সংযোগে মণিনদীতে ১০টি স্লুস গেট বিশিষ্ট ক্লোজার তৈরি করা হয়। স্লুস গেট থেকে মথুরাপুর ১ ব্লকের লালপুর পঞ্চায়েত পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার নদীর চর ও খাল কাটা হয়েছিল। ক্রমে কয়েক হাজার বিঘা জমি চাষের উপযোগী হয়ে ওঠে।

মণিনদীর সংযোগকারী খাল-লাগোয়া মথুরাপুর ১ ও ২ নালুয়া, রাধাকান্তপুর, কাশীনগর, খাড়ি ও গিলেরছাট-সহ বেশ কিছু পঞ্চায়েত আছে। কৃষিপ্রধান এই এলাকায় ক্লোজার তৈরি হওয়ায় চাষে কোনও সমস্যা ছিল না। কয়েক বছর স্লুস গেটে নজরদারি থাকায় রক্ষণাবেক্ষণও হচ্ছিল। কিন্তু মরচে পড়ে গেট ভেঙে, ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়। ফের নোনাজলে ডুবে যায় এলাকা।

এখন দোফসলি চাষ বা ধান চাষ— কিছুই হচ্ছে না। সঙ্কটে পড়েছেন এলাকার কৃষিজীবী মানুষ। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় সাত-আট বছর ধরে স্লুস গেট খারাপ। অতিবৃষ্টিতে নোনাজলে এলাকা ডুবে যাচ্ছে, অথচ জল বের করার পথ নেই। ফলে চাষ বন্ধ।

স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব পাইক বলেন, “বাম জমানায় গেটটি তৈরির পরে দেখাশোনার জন্য কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন কোনও কর্মী নেই।” এলাকার চাষি মঙ্গল হালদার বলেন, “কয়েক বছর আগে পর্যন্ত এলাকায় জমে থাকা নোনাজল নদীর ভাটার সময়ে গেট দিয়ে বের করে দেওয়া হত। অতিবৃষ্টি হলেও জল বেরিয়ে যেত। চাষে সমস্যা হত না। এমনকী, বর্ষার সময়ে ধরে রাখা মিষ্টি জলে গ্রীষ্মের বোরো ধান ও আনাজের চাষ করা যেত। কিন্তু এখন সে সব হচ্ছে না।”

কৃষিনির্ভর এলাকার মানুষ চাষের অভাবে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে ভিন্ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন বলে জানা গেল। দ্রুত গেটটি সংস্কার করে এলাকায় চাষের ব্যবস্থা করা হোক— এমনটাই দাবি স্থানীয় মানুষের।

কান্তি বলেন, “২০০৮ সালে সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের ৫ কোটি বরাদ্দের টাকায় এলাকায় স্লুস গেট ও খাল তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওই গেট সংস্কার-সহ আরও বিভিন্ন দাবি নিয়ে মঙ্গলবার সেচ দফতরে অবস্থান বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি জমা দিয়েছি।”

এ বিষয়ে রায়দিঘির বিধায়ক অলোক জলদাতা বলেন, “ওই গেটের বিষয়ে আমাকে কেউ জানাননি। গেটটি সংস্কারের বিষয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে কথা বলব। আমিও চাই এলাকার চাষিদের উপকার হোক।”

Sluice Gate Raidighi Salty Water

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}