Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

Coronavirus in West Bengal: করোনায় মৃত অভিভাবক, পড়াশোনা চালাতে সমস্যা

করোনায় বাবা অথবা মায়ের মৃত্যু হয়েছে, এমন নাবালক-নাবালিকার সংখ্যা নেহাত কম নয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

রাজীব চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২১ ০৭:৩৭
Share: Save:

কারও বাড়ি কাকদ্বীপ, কেউ বা ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা। করোনায় তাদের কারও বাবার মৃত্যু হয়েছে, কারও বা মায়ের। অভিভাবক হারানো ওই সব নাবালক-নাবালিকাদের অনেকেই পড়াশোনা করতে পারছে না। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কাছে আসছে এমন খবর।

করোনার কারণে অভিভাবক হারানো নাবালক-নাবালিকাদের যে কোনও প্রয়োজনে আইনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য প্রকল্প ঘোষণা করেছে রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা শাখা সূত্রের খবর, জুলাইয়ের মাঝামাঝি শুরু হওয়া ওই প্রকল্পে অভিভাবক হারানো ১৮ অনুর্ধ্বদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে জেলায়। জুলাই মাসে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এমন ১৪ জন নাবালক-নাবালিকার সন্ধান মিলেছে, যারা তাদের বাবা অথবা মাকে হারিয়েছে করোনায়। চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনে ওই ধরনের আরও ১৮ জনের হদিস মিলেছে। জেলায় ছড়িয়ে থাকা প্যারা-লিগাল ভলান্টিয়ারদের মাধ্যমে খুঁজে বার করা হচ্ছে তাদের। ওই ধরনের নাবালক-নাবালিকাদের তথ্য রয়েছে জেলা চাইল্ড প্রোটেকশন অফিসারের কার্যালয়েও। সেখান থেকে পাওয়া তালিকা খতিয়ে দেখে ওই সব শিশু, কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের প্যারা-লিগাল ভলান্টিয়ারেরা। লক্ষ্য, কোনও অবস্থাতেই যেন তাদের উপরে আর বিপর্যয় না নামে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিক জানান, জেলায় এখনও এমন কোনও নাবালক অথবা নাবালিকার খোঁজ মেলেনি যাদের বাবা এবং মা— উভয়েরই করোনায় মৃত্যু হয়েছে। তবে করোনায় বাবা অথবা মায়ের মৃত্যু হয়েছে, এমন নাবালক-নাবালিকার সংখ্যা জেলায় নেহাত কম নয়। তিনি বলেন, ‘‘উদ্বেগের বিষয় হল, আমাদের প্যারা-লিগাল ভলান্টিয়াররা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন, বাবা অথবা মা হারানো অনেক ছেলেমেয়েই পড়াশোনা করতে পারছে না। পরিবারে দুর্দিন নেমেছে। তাদের সম্পর্কে জেলা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে জানানো হচ্ছে। কোনও অবস্থাতেই তারা যাতে পড়াশোনা না ছাড়ে, তা নিশ্চিত করতে বলা হচ্ছে।’’ তিনি আরও জানান, ওই সব নাবালক-নাবালিকার আশু প্রয়োজন নথিবদ্ধ করা হচ্ছে। তাদের সেই সব প্রয়োজনের কথা্ প্রশাসনকে জানানো হচ্ছে। প্রতিনিয়ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন প্যারা-লিগাল ভলান্টিয়াররা।

কেন এই প্রকল্প?

করোনায় মৃত অভিভাবকদের ডেথ সার্টিফিকেট যাতে তাঁদের নাবালক ছেলেমেয়েরা দ্রুত পায়, তার ব্যবস্থা করা প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য। অভিভাবকের মৃত্যুর পরে তারা যাতে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করাও উদ্দেশ্য। অভিভাবক হারানো ছেলেমেয়েরা ঠিক মতো খাবার এবং ওষুধ-সহ প্রয়োজনীয় জিনিস পাচ্ছে কিনা, তা-ও দেখা হচ্ছে ওই প্রকল্পে। যদি দেখা যায়, তারা প্রয়োজন মোতাবেক সাহায্য পায়নি, তবে জেলা প্রশাসনের কাছে সেই বিষয়টি তুলে ধরা হবে। এ ছাড়া, করোনার মৃত বাবা কিংবা মায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা থাকলে তা যাতে তাদের ছেলেমেয়েরা পায়, আইনি পরামর্শ দিয়ে তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। বাবা-মায়ের স্থাবর অথবা অস্থাবর সম্পত্তি থাকলে, তা-ও যাতে তাদের ছেলেমেয়েরা পায়, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। অভিভাবকের মৃত্যুর পরে তাঁদের সম্পত্তির ‘সাকসেশন সার্টিফিকেট’ পাওয়ার কথা ছেলেমেয়েদের। সম্পত্তির 'মিউটেশন সার্টিফিকেটে' নাম পরিবর্তন প্রয়োজন। এই সব কাজের জন্য আইনি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মৃত বাবা বা মায়ের প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা অর্থ যাতে তাদের ছেলেমেয়েরা দ্রুত পায়, তার জন্য তাদের তরফে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানোর কাজও করা হবে ওই প্রকল্পে।

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy