ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের বাসিন্দা। —ফাইল চিত্র।
এক সময়ে বিপদে-আপদে পাশে পেয়েছিলেন বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু পড়শিদের। কিন্তু আচমকাই যেন অতি পরিচিত পরিবেশের মানুষজন পাল্টে যেতে শুরু করেছেন বলে মনে হচ্ছে তাঁর। আক্ষেপ করে প্রবীণ সংখ্যালঘু মানুষটি বললেন, ‘‘পথেঘাটে দেখা হলে ইদানীং ওঁরা কেমন যেন এড়িয়ে চলছেন। দূরত্ব তৈরি করতে চাইছেন এত দিনের পরিচিত বহু মানুষ। খুবই কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি আমরা।’’
সোমবার পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে এলেন ওই ব্যক্তি। এ দিনই নড়াইল থেকে আসা এক বৃদ্ধ দম্পতি যাচ্ছিলেন চাকদহে, আত্মীয়ের বাড়িতে। পেট্রাপোলে অটোয় বসে বৃদ্ধা বললেন, ‘‘পরিস্থিতি এমন হয়েছে, আমরা অনেক সংখ্যাগুরুর কাছে যা টাকা-পয়সা পেতাম, তা ফেরত চাইতে সাহসই পাচ্ছি না। ’’ বৃদ্ধার কথায়, ‘‘আমাদের নিজেদের জমির গাছগাছালি কেটে বিক্রি করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভয় দেখানো হচ্ছে।’’ বৃদ্ধার স্বামী জানালেন, সংখ্যালঘুদের জমি-বাড়ি বিক্রি করতে দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের আশঙ্কা, অন্যত্র চলে গেলে সব দখল হয়ে যেতে পারে।’’
নড়াইলের এক মহিলা জানালেন, রাত নামলেই আতঙ্ক গ্রাস করছে। গরু-ছাগল লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। পথেঘাটে টাকা-পয়সা নিয়ে নির্ভয়ে বের হওয়া যাচ্ছে না। ছিনতাই হয়ে যাচ্ছে।’’ এ দেশে আত্মীয়ের বাড়িতে যাবেন বলে পেট্রাপোল বন্দরে এসেছিলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা সন্তোষ বিশ্বাস। তিনি বললেন, ‘দেশের পরিস্থিতি ভাল নয়। গ্রামে গ্রামে বনভোজন, জলসা করবে বলে জোর করে টাকা চাইছে কেউ কেউ। না দিলে নানা ভাবে নির্যাতন চলছে, হুমকি দিচ্ছে।’’
বাংলাদেশের কেশবপুরের বাসিন্দা, প্রাক্তন আওয়ামী লিগের এক জনপ্রতিনিধি এসেছেন এ দেশে। জানালেন, ৬ অগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে তাঁর বাড়িতে হামলা হয়েছিল। ভাঙচুর, লুঠপাট চালানো হয়। বাড়ির মহিলারা এখনও রাস্তায় বেরোতে পারছেন না। কটূক্তি করা হচ্ছে। এক বাংলাদেশি মহিলা অবশ্য এরই মধ্যে অন্য অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। জানালেন, বাড়ি লুটপাট করতে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। সংখ্যাগুরুরাই তা প্রতিহত করেছেন।
সোমবার পেট্রাপোলে আসা বাংলাদেশিরা নজর রেখেছিলেন ঢাকায় ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিদেশ সচিব পর্যায়ের বৈঠকের দিকে। সকলেই চাইছিলেন, বৈঠক থেকে স্থায়ী সমাধান সূত্র বের হোক। যাতে তাঁরা দেশে শান্তিতে বসবাস করতে পারেন। নিজেদের দেশে মাথা উঁচু করে বাঁচতে চান সকলেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy