ছাউনি: টানা বৃষ্টির জেরে পলিথিনের আড়ালেই প্রতিমার পসরা, ক্যানিং বাজারে। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।
দুর্গাপুজো মিটতে না মিটতেই দুই জেলার বিভিন্ন বাজারে আনাজের দাম বেড়েছে। লক্ষ্মীপুজোর আগে ফল ও অন্যান্য জিনিসের দামও আকাশছোঁয়া। বাজারে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন মানুষ।
মঙ্গলবার ভাঙড়, ডায়মন্ড হারবার-সহ দক্ষিণের একাধিক বাজারে খোঁজ করে জানা গেল, গত কয়েকদিনে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে অনেকটাই। বেগুন, ঝিঙে, পালং শাক, কুমড়ো, পটল সব কিছুরই দাম বেড়েছে কেজি প্রতি গড়ে ১০-১৫ টাকা করে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা প্রতি কেজি দরে, যা গত কয়েকদিনের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। বাঁধাকপি ৪০-৪৫ টাকা, ফুলকপি ৭০-৮০ টাকা প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও যা ২০-২৫ টাকা বা আরও কমে মিলত। দক্ষিণের বিভিন্ন বাজারে আপেল প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা, মুসুম্বি লেবু জোড়া ৪০-৫০ টাকা, বেদানা প্রতি কেজি ১৪০-১৫০ টাকা, পেয়ারা প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উত্তরে হাসনাবাদের বায়লানি বাজারে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। ক’দিন আগেই যা ছিল ৩০ টাকা প্রতি কেজি। এছাড়া ২৫ টাকা কেজি দরের পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। ঝিঙের দাম ২০ টাকা প্রতি কেজি থেকে বেড়ে হয়েছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা। কাঁচালঙ্কার দর ৪০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা। টাকি বাজারে আপেল, ন্যাসপাতি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। কাঁঠালি কলার দর প্রতি পিস চার টাকা। বাতাবি লেবু বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ২৫ টাকায়।
লক্ষ্মীপুজোয় প্রয়োজনীয় চিঁড়ে, মুড়কি, খই, বাতাসা, নাড়ু, সব কিছুরই দাম বেড়েছে গতবারের তুলনায়। সব মিলিয়ে লক্ষ্মীপুজোর আগে সমস্যায় পড়েছেন বহু মানুষ।
মঙ্গলবার ভাঙড়ে বাজার করতে আসা তাপসী বিশ্বাস বলেন, “যে ভাবে ফুল, ফল, আনাজ সহ অন্যান্য জিনিসের দাম বেড়েছে, তাতে কী ভাবে বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করব বুঝতে পারছি না। সামান্য পুজোর প্রসাদের আয়োজন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজেট কমিয়ে কোনও রকমে পুজোটুকুই করব।”
প্রতিবারই পুজোর আগে জিনিসপত্রের দাম কমবেশি বাড়ে। এ বার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খারাপ আবহাওয়া। স্থানীয় সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে টানা বৃষ্টিতে জমিতে জল জমে বহু আনাজ নষ্ট হয়েছে। তার জেরেই হঠাৎ করে দাম বেড়েছে অনেকটা। লক্ষ্মীপুজোর আগে চাহিদা বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখেও অনেকে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
ভাঙড় ২ বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, “বৃষ্টির কারণে এ বার আনাজের ক্ষতি হয়েছে। যে কারণে বাজারে জিনিসপত্রের দাম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। তবে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আমরা ব্লক টাস্কফোর্স গঠন করে নজরদারি চালাচ্ছি। যাতে কেউ কৃত্রিম চাহিদা তৈরি করে দাম বাড়াতে না পারে, সেটাও দেখা হচ্ছে।”
গত দু’দিনের টানা বৃষ্টির জেরে আবার লক্ষ্মীপুজোর বাজার অনেকটা ব্যাহত হয়েছে বলে জানাচ্ছেন কিছু ব্যবসায়ী। ক্যানিং বাজারের প্রতিমা বিক্রেতা বাপ্পা পাল বলেন, “লাগাতার বৃষ্টির জন্য বিক্রিবাটা ভেস্তে গেল। মঙ্গলবার তো তেমন কেউ বাজারে আসেননি। দেখি, বুধবারটা কেমন কাটে। এ রকম চললে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে।” ফল বিক্রেতা সুবীর সর্দার বলেন, “প্রতি বছরই লক্ষ্মীপুজোয় ফলের বিশেষ চাহিদা থাকে। সে কথা মাথায় রেখে এ বারও বেশি ফল তুলেছিলাম। কিন্তু বিক্রি নেই তেমন। এমন চললে অনেক টাকার ক্ষতি হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy