প্রতীকী ছবি।
ছেলের সাইকেলের পিছনে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন বাবা। কিন্তু বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছেও আর ঘরে ফেরা হল না বৃদ্ধের। সাইকেল থেকে পড়ে লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল তাঁর।
সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে খড়দহ থানার মোড়লপাড়া মোড়ের কাছে নীলগঞ্জ রোডে। পুলিশ জানায়, ওই বৃদ্ধের নাম অজিত সাহা (৬৭)। তিনি খড়দহ পানশিলা এলাকার পূর্ব কল্যাণনগরের বাসিন্দা। ঘটনার পরে মাল বোঝাই দশ চাকার লরিটি আটক করা হলেও চালক পলাতক। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার উপরে বেআইনি গাড়ি পার্কিংয়ের কারণেই এ দিন দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, পেশায় আনাজ বিক্রেতা অজিতবাবু বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ। এ দিন দুপুরে ছেলে বিশ্বজিতের সঙ্গে সাইকেলে চেপে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন জরুরি কয়েকটি কাজের জন্য। বাড়ি ফেরার সময়ে গিয়েছিলেন গ্যাসের দোকানে। সেখানেও কাজ মিটিয়ে ১২টা নাগাদ বাবা ও ছেলে নীলগঞ্জ রোড ধরে পূর্ব কল্যাণনগরের বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। সাইকেল চালাচ্ছিলেন বিশ্বজিৎ আর পিছনে ক্যারিয়ারে বসেছিলেন অজিতবাবু। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোড়লপাড়া মোড়ের কাছে নীলগঞ্জ রোডের উপরেই দাঁড়িয়েছিল একটি অ্যাম্বুল্যান্স ও একটি লরি। সেই লরি থেকে কয়লা নামানো হচ্ছিল। রাস্তার পাশে দু’টি গাড়ি থাকায় জায়গা বেশ কিছুটা সরু হয়ে গিয়েছিল। তার মাঝখান দিয়েই কাটিয়ে বার হচ্ছিল দশ চাকার লরিটি।
রহড়া কল্যাণনগর থেকে কল্যাণী রোডের দিকে যাওয়া সিমেন্ট বোঝাই ওই লরির পাশ দিয়েই সাইকেল নিয়ে যাচ্ছিলেন বিশ্বজিতেরাও। সেই সময়ে লরিটি পাশ কাটাতে গেলে সাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন বিশ্বজিৎ। সাইকেল নিয়েই তিনি নিজের ডান দিকে পড়ে যান। টাল সামলাতে না পেরে নিজের বাঁ দিকে পড়ে যান অজিতবাবুও। আর তাতেই লরিটির পিছনের চারটি চাকার মাঝে বৃদ্ধের শরীরের উপরের অংশ ঢুকে যায়। তাতেই পিষে যান তিনি। অভিযোগ, বৃদ্ধকে চাকার নীচে ঢুকে যেতে দেখে ওই অবস্থাতেই লরি ফেলে চম্পট দেয় চালক।
অজিতবাবুর জামাই ত্রিনাথ রাজবংশী বলেন, ‘‘এক প্রতিবেশীর থেকে খবর পাই শ্বশুরের দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসে দেখি এই অবস্থা। তবে শ্যালক প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন।’’ সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে হাতে পায়ে অল্পবিস্তর চোট পেয়েছেন বিশ্বজিৎও। তবে চোখের সামনে বাবাকে লরির চাকায় পিষে যেতে দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন ওই যুবক। দুর্ঘটনার পরে স্থানীয় লোকজন লরির চাকায় আটকে থাকা বৃদ্ধের দেহের উপরে প্লাস্টিক চাপা দিয়ে দেন। খবর পেয়ে খড়দহ থানার পুলিশ এসে লরিটি সরিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
রাস্তায় গাড়ি পার্কিংয়ের বিষয়ে ব্যারাকপুর-২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি সুকুর আলি বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে রাস্তার ধারে গাড়ি দাঁড়াবে ঠিকই। কিন্তু স্থায়ী ভাবে যাতে পার্কিং করা না হয় সে দিকেও নজর দেওয়া হবে।’’ এ বিষয়ে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘সোদপুর উড়ালপুল দিয়ে ভারী গাড়ি চলাচল বন্ধ। তাই ওই রাস্তা দিয়েই সব গাড়ি চলাচল করে। রাস্তার ধারে বেআইনি পার্কিংও মাঝেমধ্যেই সরানো হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy