Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪
kakdwip

তথ্য যাচাইয়ে গিয়ে নেতাদের হুমকি, অভিযোগ আশাকর্মীদের

তথ্য যাচাইয়ের কাজে নামা আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দাবি, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই পাকা বাড়ি করে ফেলেছেন। তা সত্ত্বেও তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে চাইছেন না।

আবাস যোজনার তথ্য যাচাইয়ের কাজে দুই কর্মী। নামখানায়। নিজস্ব চিত্র

আবাস যোজনার তথ্য যাচাইয়ের কাজে দুই কর্মী। নামখানায়। নিজস্ব চিত্র

সমরেশ মণ্ডল
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:১৬
Share: Save:

আবাস যোজনার তথ্য যাচাইয়ের কাজ করতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়ছেন আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। অভিযোগ, নানা ভাবে চাপ দিচ্ছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। তালিকায় নাম না থাকলে আগামিদিনে এলাকায় কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ‘চামড়া গুটিয়ে’ দেওয়ার হুমকিও শুনছেন কেউ কেউ। আতঙ্কে তথ্য যাচাইয়ের কাজ থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছেন অনেকেই। এ ব্যাপারে ব্লক প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন তাঁরা। কাকদ্বীপ মহকুমার একাধিক ব্লকে এ রকম স্মারকলিপি জমা পড়েছে গত কয়েকদিনে।

বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পরে নতুন করে আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা ফের দেওয়ার কথা জানিয়েছে কেন্দ্র। কাদের প্রকৃতই পাকা বাড়ি দরকার, তার পুরনো তালিকাটি নতুন করে খতিয়ে দেখার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।

প্রশাসন সূত্রের খবর, কয়েক বছর আগে এলাকার গরিব মানুষের তালিকা তৈরি হয়েছিল। সেই তালিকা অনুযায়ী কারা এখনও কাঁচা বাড়িতে রয়েছেন, তা খতিয়ে দেখতে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই কাজ করতে গিয়েই বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ।

তথ্য যাচাইয়ের কাজে নামা আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দাবি, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই পাকা বাড়ি করে ফেলেছেন। তা সত্ত্বেও তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে চাইছেন না। সে জন্য নানা ভাবে চাপ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

কাকদ্বীপ এলাকার এক আশাকর্মী বলেন, “শাসক দলের এক বুথ যুব সভাপতির বাড়িতে তথ্য যাচাইয়ে গিয়েছিলাম। দিব্যি পাকা বাড়ি রয়েছে। অথচ তালিকায় নাম রাখতে হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। বলা হচ্ছে, তালিকায় নাম না থাকলে পরবর্তী সময়ে এলাকায় কাজ করতে দেওয়া হবে না। প্রশাসনের নির্দেশে কাজে নেমেছি, কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?”

আর এক আশাকর্মীর কথায়, “এলাকায় কাজ করতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। নাম বাদ গেলে পিঠের চামড়া তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমাদের কোনও নিরাপত্তা নেই।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, তালিকা সম্পূর্ণ ভাবে ত্রুটিমুক্ত করতে কয়েকটি স্তরে যাচাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রথমে গ্রামে-গ্রামে খোঁজ নিয়ে তালিকা তৈরি করছেন আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। দ্বিতীয় স্তরে তালিকা খতিয়ে দেখবেন পঞ্চায়েতের আধিকারিকেরা। তৃতীয় স্তরে সংশ্লিষ্ট ব্লক ভূমি আধিকারিক, থানার ওসি বা আইসিরা তালিকা ধরে বিক্ষিপ্ত ভাবে খতিয়ে দেখবেন। পরে তালিকা ধরে মোট উপভোক্তার ১০ শতাংশ খতিয়ে দেখবেন বিডিওরা। তিন শতাংশ মহকুমাশাসক এবং তিন শতাংশ জেলাশাসক খতিয়ে দেখবেন। এরপরেই খসড়া তালিকা প্রকাশিত হবে।

পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের রাজ্য কমিটির সদস্য মনিরুল ইসলাম বলেন, “আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কাজ প্রাথমিক তথ্য যাচাই করে দেখা। চূড়ান্ত তালিকা তাঁরা তৈরি করবেন না। তাও তাঁদের উপরে নানা ভাবে রাজনৈতিক চাপ আসতে শুরু করেছে। এরই প্রতিবাদে আমরা প্রতিটি ব্লকে বিএমওএইচ ও বিডিওদের কাছে স্মারকলিপি দিচ্ছি।”

কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের সত্যব্রত মাইতি বলেন, “এলাকায় তথ্য যাচাইয়ের জন্য বিডিও দফতর থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে এলাকায় কাজ করছেন। যাঁদের পাকা বাড়ি আছে, তাঁরা তালিকা থেকে বাদ যাবেন। এটা নিয়ে কর্মীদের উপরে কোনও ভাবে চাপ সৃষ্টি করা হলে তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, “নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে কর্মীরা এলাকায় গিয়ে কাজ করছেন। কোনও অভিযোগ এলে বিষয়টি দেখার জন্য আধিকারিকদের বলা হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

kakdwip Asha Workers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy