বাংলাদেশি প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়েছিল বছর সতেরোর এক কিশোরী। মাঝপথে ‘দিশাহারা’ হয়ে পড়ে। সীমান্তের গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাকে উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার পেট্রাপোল সীমান্তে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা ওই নাবালিকার সঙ্গে বছরখানেক আগে সমাজমাধ্যমে বাংলাদেশি এক যুবকের পরিচয় হয়েছিল। বন্ধুত্ব গড়ায় ভালবাসায়। সম্প্রতি দু’জনে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। ঠিক হয়, মেয়েটি বাংলাদেশে যাবে।
‘প্রেমিক’ তাকে আশ্বাস দিয়েছিল, বনগাঁ দিয়ে চোরাপথে বাংলাদেশে আসা যায়। পুলিশকে নাবালিকা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে সে বাড়ি থেকে পালায়। বনগাঁ হয়ে বাংলাদেশ যাবে ভেবেছিল। ট্রেনে বনগাঁ স্টেশনে নেমে টোটো ধরে পেট্রাপোলে পৌঁছয়। তখন রাত হয়ে গিয়েছে। কী ভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে যাবে, বুঝতে পারছিল না সে। উদভ্রান্তের মতো ঘোরাঘুরি করছিল। এলাকার কয়েক জনের সন্দেহ হয়। তারা মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেন। আশ্বাস দেন, গন্তব্যে পৌঁছে দেবেন। সেই মতো এক ব্যক্তির বাড়িতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই বাড়ি থেকেও মেয়েটি ফোনে প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলে। তাকে অনুরোধ করে, এখান থেকে যে ভাবেই হোক তাকে যেন বাংলাদেশে নিয়ে যায়। লোকজন থানায় খবর দেবেন কিনা, তা নিয়ে কথা বলছিলেন। সে কথা কানে যায় মেয়েটির। পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশে খবর দেওয়ার কথা শুনে নাবালিকা ভয় পেয়ে বাড়ির ছাদ থেকে নীচে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। পায়ে চোট পায়। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে থানায় আনে। শুক্রবার সকালে খবর পেয়ে মেয়েটির বাবা-মা পেট্রাপোল থানায় আসেন। তার বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। মা বিড়ি বাঁধেন। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছেন, এক আত্মীয় মারা যাওয়ায় বৃহস্পতিবার তাঁরা শেষকৃত্যে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে মেয়ে বাড়ি থেকে পালায়। তাঁরা স্থানীয় থানায় অভিযোগও করেন।
পুলিশের কাছে মেয়েটি প্রথমে বলেছিল, তাকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সে পালিয়ে বাংলাদেশে যাচ্ছিল। অভিভাবকেরা অবশ্য এই কথা মানেননি। পেট্রাপোল থানার পক্ষ থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংশ্লিষ্ট থানার হাতে নাবালিকাকে তুলে দেওয়া হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)