সংসার চালাতে চড়া সুদে ৬০ হাজার টাকা ধার করেছিলেন যুবক। কিন্তু সময়মতো আসল দিতে না-পারায় তাঁকে কিডনি বিক্রির পরামর্শ দেন পাওনাদার। কার মাধ্যমে কিডনি বিক্রি করবেন, সেই যোগাযোগও করিয়ে দেন তিনি। কিন্তু কিডনি বিক্রির পরেই এক লাফে ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন সেই পাওনাদার। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে। পুলিশের জালে এক কিডনি পাচারকারী। গ্রেফতার ওই সুদখোরও।
পুলিশ সূত্রে খবর, অশোকনগর থানার হরিপুরের বাসিন্দা বিকাশ ঘোষ ওরফে শীতলের কাছে চড়া সুদে ৬০ হাজার টাকা ধার নেন স্থানীয় এক যুবক। তাঁর দাবি, এ পর্যন্ত প্রায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা সুদ দিয়েছেন। কিন্তু আসলের ৬০ হাজার টাকা শোধ দিতে পারছিলেন না। ও দিকে পাওনাদার শীতল চাপ বাড়াচ্ছিলেন। কী ভাবে একসঙ্গে ৬০ হাজার টাকা জোগাড় করবেন, ভেবে অকূলপাথারে পড়েন ঋণগ্রস্ত যুবক। তখন ওই পাওনাদার পরামর্শ দেন, কিডনি বিক্রির। এমনকি তিনি যুবক এবং তাঁর স্ত্রীকে জানান, তাঁর চেনাজানা একজন আছেন। তাঁর মাধ্যমে দম্পতি কিডনি বিক্রি করতে পারবেন। উপায়ন্তর না দেখে কিডনি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেন গরিব দম্পতি।
যুবকের দাবি, শীতলের মাধ্যমে এক মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তাঁরা। তার পর তাঁর স্ত্রীর একটি কিডনি বিক্রি হয়। কলকাতার একটি হাসপাতালে কিডনি হস্তান্তর হয়েছে। ঠিক তার পরেই সুদখোর শীতল এসে দাবি করেন, আসলের ৬০ হাজার টাকা তো লাগবেই, তাঁকে আরও ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিতে হবে। অর্থাৎ, মোট ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন তিনি। শুরু হয় কথা কাটাকাটি। শেষমেশ পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই যুবক।
আরও পড়ুন:
লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত শীতলকে গ্রেফতার করেছে অশোকনগর থানার পুলিশ। গ্রেফতার হন সেই মহিলাও। তদন্তকারীরা মনে করছেন, কিডনি পাচারচক্রের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে মহিলার। তাঁদের সঙ্গে আরও কারা এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত, জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ধৃতদের হাজির করানো হবে আদালতে। তাঁদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে পুলিশ।