রূপান্তরের আশায় । নিজস্ব চিত্র।
এক সময়ে সেচ দফতরের মগরাহাট ড্রেনেজ ডিভিশনের অন্তর্গত ক্যানিংয়ের ডাবু এলাকা পর্যটনের জন্য যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। এখনও শীতের মরসুমে বহু পর্যটক চড়ুইভাতি করার জন্য এখানে ভিড় জমান। কিন্তু এই পর্যটনকেন্দ্রের পরিকাঠামো গত বেশ কয়েক বছর ধরে ভেঙে পড়েছে। নতুন করে ডাবুকে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেচ, মৎস্য ও পর্যটন দফতর।
মাতলা নদীর শাখা ডাবু খাল সংলগ্ন এই এলাকার চারিদিক ম্যানগ্রোভে ঘেরা। এ ছাড়াও, সেখানে বেশ কিছু মিষ্টি জলের জলাশয় ঘিরে প্রচুর বড় বড় গাছগাছালি রয়েছে। সারাক্ষণ পাখিদের কলতান ও অফুরন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমাহার এই ডাবু। চড়ুইভাতির পাশাপাশি রয়েছে নৌকোবিহারের ব্যবস্থা। সারাটা দিন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে চড়ুইভাতির জন্য কার্যত আদর্শ জায়গা।
কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবের জন্য উৎসাহ হারিয়েছেন পর্যটকেরা। দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলায় পড়ে থাকার ফলে প্রচুর গাছ, সরকারি সম্পত্তি চুরি হচ্ছে দিনের পর দিন। বর্তমানে সেচ দফতরের জলাশয়গুলি স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির দখলে রয়েছে। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এখানে মাছ চাষ করছেন অনেকে। এ বার সেচ দফতর ও মৎস্য দফতর যৌথ ভাবে উদ্যোগী হয়েছে এই এলাকার সংস্কারের করার জন্য। প্রাথমিক ভাবে সরকারি জলাশয়গুলিকে বিভিন্ন মৎস্য সমবায় সমিতির মাধ্যমে লিজ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই সমিতির সদস্যেরাই জলাশয়গুলিতে মাছ চাষ করবেন। পাশাপাশি, জলাশয়গুলিকে ঘিরে ল্যান্ডিং স্টেশন, কটেজ গড়ে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে। সুন্দরবন ভ্রমণে এসে যাতে এখানেই দু’একদিন পর্যটকেরা কাটিয়ে যেতে পারেন, সেই উদ্যোগ করা হচ্ছে। ক্যানিং ১ ব্লক মৎস্য দফতরের আধিকারিক অরুণ দেব বলেন, ‘‘ডাবুতে যে বিপুল পরিমাণ জলাশয় রয়েছে, সেগুলি মাছ চাষের উপযোগী করে গড়ে তোলার পাশাপাশি সেখানে পর্যটকদের থাকা ও মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ করা হচ্ছে। অনেকটা কলকাতার ক্যাপ্টেন ঘেরি, তারাতলা নেচার পার্ক, বেনুবন ছায়ার আদলে এ সব হবে।’’ তিনি আরও জানান, এই জলাশয়গুলিকে ঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারলে বিপুল পরিমাণ মাছ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। প্রায় ৮২ একর জায়গার মধ্যে ৬২ একর জমিই জলাশয়। এর মধ্যে এই এলাকায় ইকো ট্যুরিজম গড়ে তুলতে ইতিমধ্যেই রাজ্য পর্যটন দফতরকে সাড়ে বারো একর জমি দিয়েছে সেচ দফতর। সেই জমিতেও দ্রুত সৌন্দর্য্যায়নের কাজ শুরু হওয়ার কথা। পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, এখনও প্রজেক্ট রিপোর্ট জমা না পড়লেও দ্রুত সেই কাজ শুরু হবে। অন্য দিকে, ইতিমধ্যেই সেচ দফতরের উদ্যোগে ডাবু বাংলো সংস্কার হয়েছে। আমপানে এলাকার বিদ্যুৎতের ক্ষতি হয়েছিল। তাই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ, রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা ও রাস্তা সংস্কার সহ অন্যান্য কাজের জন্য ১ কোটি ৭ লক্ষ টাকার প্রোজেক্ট জমা দেওয়া হয়েছে সেচ দফতরের তরফ থেকে। পাশাপাশি সমগ্র এলাকাটিকে কংক্রিটের পাঁচিল দিয়ে ঘেরার জন্যও প্রোজেক্ট জমা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বলেন, ‘‘ডাবুতে ইকো ট্যুরিজম গড়ে তোলা হবে। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের একাধিক দফতর উদ্যোগী হয়েছে। পর্যটকেরা এখানে এলে স্থানীয় অর্থনীতি চাঙ্গা হবে। বহু মানুষ উপকৃত হবেন। পাশাপাশি সরকারি আয়ের উৎসও তৈরি হবে।’’
ডাবুকে নতুন করে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার খবরে খুশি এলাকার মানুষজন। স্থানীয় বাসিন্দা রবিন মণ্ডল, বিধান রায়রা বলেন, ‘‘এখানে পর্যটকেরা এলে বহু মানুষের কাজ হবে। বিভিন্ন ধরনের ব্যবসার সুযোগ বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy