মোবাইল চোর সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে খুন করা হয়েছিল পানিহাটির বাসিন্দা শম্ভু চক্রবর্তীকে। ১১ বছর আগের সেই ঘটনায় ইতিমধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে পানিহাটির এক পুরপ্রতিনিধি, তার ভাই-সহ আরও তিন জন। সেই ঘটনায় এ বার দোষীদের কঠিন শাস্তির দাবি তুলছেন মৃতের স্ত্রী জ্যোৎস্না চক্রবর্তী৷
আগামী মঙ্গলবার ওই মামলার রায় দেবে কোর্ট। তার আগে শনিবার জ্যোৎস্না বলেন, ‘‘এত বছর ধরে অপেক্ষা করেছি বিচারের জন্য। আশা করি, আদালত কঠিন শাস্তি দেবে।’’ কান্নায় ভেঙে পড়ে তিনি জানান, ২০১৪ সালে দুর্গাপুজোর সময়ে একটি পুজোমণ্ডপ থেকে একটি মোবাইল চুরি যায়। সেই মণ্ডপে ঢুকেছিলেন শম্ভু। তাই সন্দেহ করা হয়, তিনি মোবাইল চুরি করেছেন। এর পরে তাঁকে ধরে, বাঁশে বেঁধে পিটিয়েছিলেন পানিহাটির ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি এবং বর্তমান পুরপ্রতিনিধি তারক গুহ, তার ভাই তৃণমূল নেতা নেপাল গুহ ও তাদের দলবল।
জ্যোৎস্না বলেন, ‘‘সেই সময় আমি কাজে ছিলাম। খবর পেয়ে এক আত্মীয় গিয়ে হাতেপায়ে ধরে স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু কেউ শোনেননি। বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে আমার স্বামীর পাঁজরের হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, পায়ুদ্বারে পাথর ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’’ ঘটনার পরে প্রথমে পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল শম্ভুকে। বাড়ি ফিরিয়ে আনার পরে ফের সমস্যা হওয়ায় তাঁকে কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে পরিচারিকার কাজ করেই দুই সন্তানকে বড় করেছেন জ্যোৎস্না।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)