এই কারখানা থেকেই চলত কারবার। ছবি: সুজিত দুয়ারি
বেআইনি জলের কারবারের হদিস মিলল হাবড়ায়। নাম জড়িয়েছে দুই ভাইয়ের। যাঁদের মধ্যে একজন আবার সরকারি কর্মী!
পাকা একতলা বাড়িটির পিছনে টিনের দেওয়াল, টিনের ছাউনি দেওয়া জায়গায় দীর্ঘ দিন ধরেই চলছিল বেআইনি পানীয় জল তৈরির প্ল্যান্ট। লোকের চোখের খুব আড়ালেও নয়। মঙ্গলবার দুপুরে হাবড়ার হাটথুবা সুকান্ত সরণি এলাকার ওই প্ল্যান্টে অভিযান চালায় উত্তর ২৪ পরগনা জেলা এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ডিইবি)। সঙ্গে ছিল হাবড়া থানার পুলিশ। কারখানার ভিতরে ঢুকে কর্তারা দেখেন, সারি সারি সাজানো পানীয় জল ভর্তি জার, খালি জার, যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক। জানা গিয়েছে, মাটির তলা থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল তুলে ট্যাঙ্কে জমা করা হত এখানে। তারপরে ওষুধ ও রাসায়নিক মিশিয়ে কিছুটা পরিস্রুত করে তা জারে ভর্তি করে বাজারে বিক্রি করা হত। জারের গায়ে লেখা স্টিকার, ‘অক্সিজেন’ ও ‘সম্প্রীতি’।
ডিইবি কর্তাদের দাবি, পানীয় জল উৎপাদনের জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট অনুমতি ছিল না। বেআইনি ভাবেই চলছিল কারবার। জল আদৌ বিধিসম্মত ভাবে পরিস্রুত করা হত না বলেই নিশ্চিত দফতরের আধিকারিকেরা। অথচ, মিনারেল ওয়াটারের নামে ওই জলই নিশ্চিন্তে কিনতেন ক্রেতারা। ডিইবি ও পুলিশ জানিয়েছে, পানীয় জলের কারখানা ও গুদাম চালান দুই ভাই পার্থ ও সুকান্ত সরকার। প্রায় সাত বছর ধরে চলছিল কারবার। দুই ভাইকে খুঁজছে পুলিশ। তাঁদের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। কারখানাটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। উদ্ধার করা জল পরীক্ষার জন্য সরকারি ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হচ্ছে।
সুকান্তর স্ত্রীর তুলির অবশ্য দাবি, পার্থই কারবার চালাতেন। তাঁর স্বামী চাকরি করেন। জানা গেল, হরিণঘাটা বিডিও অফিসে রুরাল ওয়াটার স্যানিটেশন বিভাগের কর্মী সুকান্ত। বিডিও কৃষ্ণগোপাল ধাড়া জানান, তাঁর দফতরের কর্মী বেআইনি কারবারে জড়িত, এমন কোনও খবর তিনি জানেন না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে পার্থ কিছু দিন একটি সংস্থায় নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করেছেন। পরে একটি পানীয় জল উৎপাদন কারখানায় জল বহনের কাজ করতেন। সাত বছর আগে বাড়িতে ‘সম্প্রীতি’ নাম দিয়ে পানীয় জলের কারবার শুরু করেন। কারবার বাড়তে থাকায় বছর তিনেক আগে বাড়িতে বড় কারখানা তৈরি করেন। সেখানে ‘সম্প্রীতি’ ও ‘অক্সিজেন’ নামে জলের কারবার শুরু করেন। স্কুল, বাজার, হোটেলে জল বিক্রি হত। বহু সাধারণ মানুষ বাড়িতেও এই জল কিনে খেতেন।
কারখানায় কাজ করে চারজন। জল বহনের কাজ করে আরও বারোজন লোক। রোজ ৫০০ ব্যারেল জল এখান থেকে জারে ভরে বিক্রি করা হত। কেউ জার কিনে দিলে ২০ লিটার জলের দাম নেওয়া হত ৬ টাকা। সাধারণ ভাবে ২০ লিটার জল বিক্রি হত ১৫ টাকায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy