Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

মহিলার ঝুলন্ত দেহ, মারধর 

পর পর কন্যা সন্তান জন্মানোয় অত্যাচারের মাত্রাও বেড়েছিল বলে অভিযোগ। পরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয় ঠিকই। কিন্তু তাতেও নির্যাতন কমেনি। শেষমেশ রবিবার ওই মহিলার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁরই শ্বশুরবাড়ির থেকে। 

বিক্ষোভ: প্রীতিলতার শ্বশুরবাড়ি ঘিরে রয়েছে গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র

বিক্ষোভ: প্রীতিলতার শ্বশুরবাড়ি ঘিরে রয়েছে গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নামখানা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩৬
Share: Save:

পর পর কন্যা সন্তান জন্মানোয় অত্যাচারের মাত্রাও বেড়েছিল বলে অভিযোগ। পরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয় ঠিকই। কিন্তু তাতেও নির্যাতন কমেনি। শেষমেশ রবিবার ওই মহিলার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় তাঁরই শ্বশুরবাড়ির থেকে।

নামখানার উত্তর চন্দনপিড়ি গ্রামের ঘটনা। এই খবর চাউর হতেই ওই মহিলাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে জনতা তাঁর স্বামীকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে গেলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে পারেনি। পরে জনতাকে শান্ত করে পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রীতিলতা মণ্ডল মাইতি (২৮) নামে ওই মহিলার স্বামী সুশান্ত মাইতি ও শাশুড়ি কবিতাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর বারো আগে পাশের গ্রাম দক্ষিণ চন্দনপিড়ির প্রীতিলতার সঙ্গে সোনার ব্যবসায়ী সুশান্ত মাইতির বিয়ে হয়। পর পর ওই মহিলার দু’টি কন্যা সন্তান হয়। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, সেই কারণে তাঁর উপর অত্যাচার করা হত। বছর কয়েক ধরে প্রতিবেশী ও ওই মহিলার বাপের বাড়ির সঙ্গে প্রায় মেলামেশাও বন্ধ করে দিয়েছিল তাঁর স্বামী।

প্রীতিলতার বাপের বাড়ির লোকেরা জানান, দিন দিন অত্যাচারের মাত্রা বাড়ছিল। মাসখানেক আগে গ্রামে এই নিয়ে সালিশি সভা ডাকতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি।

এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ বাড়ির কাছেই দোকানে বেরিয়ে যান সুশান্ত। সে সময় ছেলেমেয়েরাও বাইরে খেলা করছিল। কিছুক্ষণ পরে ছেলেমেয়েরা বাড়িতে ঢোকে। মৃতার বড় মেয়ে সুপ্রিয়া মাকে নীচের ঘরে দেখতে না পেয়ে ডাকাডাকি শুরু করে। উপরে দোতলার একটি ঘরে মায়ের ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায় সে। খবর পেয়ে সুশান্ত দোকান থেকে বাড়ি চলে আসে।

ক্ষিপ্ত জনতা মারধর শুরু করে সুশান্তকে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করতে এলে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। প্রতিবেশীদের দাবি, প্রীতিলতার তিন ছেলে-মেয়ের নামে সম্পত্তি লিখে দিতে হবে। তবেই দেহ ছাড়া হবে। পুলিশ তাঁদের দাবি মেনে নিলে। মৃতদেহ ছাড়েন তাঁরা।

বছর আটের সুপ্রিয়া জানায়, বাবা মাঝে মধ্যেই মায়ের সঙ্গে গন্ডগোল করত। মা খুব কান্নাকাটি করতেন। মৃতার মা গৌরী মণ্ডল বলেন, ‘‘মেয়েকে বাপের বাড়ি যেতে দিত না। মেয়ে আমাদের জানিয়েছিল জামাইয়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। তাই এমন ব্যবহার করত সে। মেয়েকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Death Crime Hanging Body Woman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE