Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ছাগল দখল করতে হাতাহাতি তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীতে

সরকার মা-মাটি-মানুষের। কিন্তু ছাগল কার? এ বার ছাগল নিয়ে হাতাহাতি হয়ে গেল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর। গোলমালের মধ্যে প্রায় ৪৫টা ছাগল বগলদাবা করে চম্পট দিল কিছু লোক। শেষমেশ বন্দুকধারী পুলিশের পাহারায় বাদবাকি ছাগল বিলি করলেন প্রাণিসম্পদ বিভাগের আধিকারিকরা।

অঙ্কন: সুমিত্র বসাক

অঙ্কন: সুমিত্র বসাক

সামসুল হুদা
ক্যানিং শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৩
Share: Save:

সরকার মা-মাটি-মানুষের। কিন্তু ছাগল কার?

এ বার ছাগল নিয়ে হাতাহাতি হয়ে গেল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর। গোলমালের মধ্যে প্রায় ৪৫টা ছাগল বগলদাবা করে চম্পট দিল কিছু লোক। শেষমেশ বন্দুকধারী পুলিশের পাহারায় বাদবাকি ছাগল বিলি করলেন প্রাণিসম্পদ বিভাগের আধিকারিকরা।

জমির দখল, ভেড়ির দখল, কিংবা সিন্ডিকেটের এলাকা দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের রায়বাঘিনি মোড়ে গোলমাল বাধল ছাগলের দখল নিয়ে। দু’দলই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক। দলের এক নেতা, দিঘিরপাড় পঞ্চায়েতের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি অনিমেষ মণ্ডলের ক্ষোভ, “আমাদের এলাকায় অনুষ্ঠান। অথচ, আমাদেরই কিছু জানানো হয়নি। বাইরের লোককে ডেকে এনে ছাগল দেওয়া হচ্ছে।” এ নিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়, বাইরের লোকদের দিয়ে তাঁদের উপর হামলা, মারধরও করা হয় বলে তাঁর অভিযোগ। ক্যানিং ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের পরেশ রাম দাসও বলেন, “সরকারি ভাবে আমাদের অনুষ্ঠানের কথা জানানো হয়নি।”

ওই দুই নেতার অভিযোগের তির যাঁর দিকে, তিনি জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি শৈবাল লাহিড়ি। নিজের অনুগামীদের তিনি ছাগল পাইয়ে দিচ্ছিলেন বলে নালিশ করছেন দলের অন্য গোষ্ঠীরা। শৈবালবাবু নিজেও এ দিন ছিলেন অনুষ্ঠানে। তাঁর বক্তব্য, “এটা সরকারি অনুষ্ঠান, কোনও দলীয় ব্যাপার নয়। কিছু মানুষ অনুষ্ঠান ভেস্তে দিতেই হামলা চালায়। সরকারি টাকায় কেনা ৪৫টি ছাগল নিয়ে ওরা পালিয়েছে বলে শুনেছি।”

কিন্তু সরকারি অনুষ্ঠানই যদি হবে, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান এমনকী, বিডিও-এসডিওদের আমন্ত্রণ জানানো হল না কেন? শৈবালবাবুর দাবি, যে দফতরের অনুষ্ঠান, সে দফতরের কর্তারা তো ছিলেন।

এ দিন ক্যানিং ১ ব্লকের ২০টি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ২০০ জনকে ছাগল বিলির কথা ছিল। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের উদ্যোগেই অনুষ্ঠান। ওই দফতরের আধিকারিকেরা হাজির ছিলেন। তাঁদের সামনেই দু’পক্ষের হাতাহাতি বেধে যায়। ছাগল নিয়ে শুরু হয় টানাহেঁচড়া। গোলমালের খবর পেয়ে ওসি সতীনাথ চট্টরাজের নেতৃত্বে পুলিশ-র্যাফ, ইএফআর আসে। তাদের কড়া নজরদারিতে ছাগল বিলি ফের শুরু হয়। সন্ধের দিকে ব্লক প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন আধিকারিক উদয় সাহা ছাগল চুরির ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করেন থানায়। মারপিটের কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি।

তাতে আরও ফাঁপরে পড়ল পুলিশ। থানার এক প্রবীণ পুলিশ কর্মীর কথায়, “নাও, এ বার ঠ্যালা সামলাও। চোর-ডাকাত না ধরে সারা দিন মাঠে-ঘাটে ছাগল খুঁজতে হবে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE