গোবরডাঙার পুরপ্রধান হিসেবে দিন কয়েক আগে শপথ নিয়েছেন শঙ্কর দত্ত। বেহাল চিকিৎসা পরিষেবা, নিকাশি, পানীয় জল, যমুনা নদী সংস্কার, সংকীর্ণ রাস্তার মতো বেশ কিছু সমস্যা এখনও ভোগাচ্ছে শহরবাসীকে। আনন্দবাজার পত্রিকার মুখোমুখি পুরপ্রধান। শুনলেন, সীমান্ত মৈত্র।
আনন্দবাজার: গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে ২০১৪ সাল থেকে রোগী ভর্তি বন্ধ। কার্যত কোনও পরিষেবা মেলে না। পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল চালু করা নিয়ে আপনার কী পরিকল্পনা?
শঙ্কর: গ্রামীণ হাসপাতালটিকে স্টেট জেনারেল হাসপাতাল হিসেবে তৈরি করাই হবে আমার অগ্রাধিকার। মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আমরা আবারও স্বাস্থ্য দফতর ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব।
আনন্দবাজার: বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে আপনার পদক্ষেপ কী হবে?
শঙ্কর: নৈহাটি থেকে গঙ্গার জল নিয়ে আসার কাজ অশোকনগর, হাবড়া হয়ে মছলন্দপুর পর্যন্ত হয়েছে। আমরা ওই প্রকল্পের সঙ্গে গোবরডাঙাকে যুক্ত করব। পাম্প স্টেশন তৈরি করে পরিস্রুত জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হবে।
আনন্দবাজার: প্রতি বছর বর্ষার ভারী বৃষ্টিতে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। কয়েক মাস বাসিন্দাদের জলবন্দি হয়ে কাটাতে হয়। নিকাশির হাল ফেরাতে কী পদক্ষেপ করবেন?
শঙ্কর: কিছু কিছু নিকাশি নালা অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি হয়েছিল। ফলে তা দিয়ে জল যমুনা নদীতে গিয়ে পড়ে না। আমরা মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে সব নিকাশি নালার সঙ্গে যমুনাকে যুক্ত করব। যাতে জল জমলেও তা দ্রুত যমুনায় চলে যেতে পারে।
আনন্দবাজার: যমুনা নদী, কঙ্কনা বাওড়, রত্না খাল-সহ সমস্ত জলাশয় সংস্কারের বিষয়ে কী ভাবনা আছে?
শঙ্কর: কয়েক বছর আগে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পলি তুলে যমুনা নদীর সংস্কার হয়েছিল। তবে আরও ড্রেজিংয়ের প্রয়োজন। গভীরতা আরও বাড়াতে হবে। সেচ দফতরের কাছে যমুনা সংস্কারের আবেদন করব। পাশাপাশি, কঙ্কনা বাওড়, রত্না খাল-সহ জলাশয়গুলি সংস্কার করতে পদক্ষেপ করা হবে।
আনন্দবাজার: অতীতে গোবরডাঙার নামডাক ছিল খেলাধূলায়। নিয়মিত প্রতিযোগিতার আয়োজন হত। প্রতিভা উঠে আসত। সে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ক্রীড়াসংস্কৃতি ফেরাতে কিছু ভাবছেন?
শঙ্কর: পুরসভার পক্ষ থেকে আগে প্রদর্শনী খেলার আয়োজন করা হত। করোনা পরিস্থিতিতে সে সব বন্ধ। আমরা এলাকার ক্লাব, ক্রীড়া সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে আলোচনা করে নিয়মিত খেলাধূলার আয়োজন করব। স্পোর্টস অ্যাকাডেমি তৈরি করে প্রতিভা তুলে আনা হবে।
আনন্দবাজার: ঐতিহ্যের শহর গোবরডাঙা। বাসিন্দাদের দাবি হেরিটেজ শহর ঘোষণার।
শঙ্কর: এ বিষয়ে আমরা যথাস্থানে দাবি জানিয়ে আবেদন করব।
আনন্দবাজার: গোবরডাঙায় অনেক ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান আছে। পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার কোনও ভাবনাচিন্তা আছে?
শঙ্কর: কঙ্কনা বিনোদন পার্ককে কেন্দ্র করে আমরা পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলব। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসতে পারবেন। তাঁদের থাকার ব্যবস্থা থাকবে।
আনন্দবাজার: সংকীর্ণ রাস্তা সংস্কারের বিষয়ে কী পদক্ষেপ করবেন?
শঙ্কর: গোবরডাঙা স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় এবং কালীবাড়ি মোড় থেকে পুরনো থানা পর্যন্ত এলাকায় রাস্তা সংকীর্ণ। দু’টি গাড়ি পাশাপাশি যেতে পারে না। অনেকেই রাস্তার জমি জবরদখল করে আছেন। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তা চওড়া করব।
আনন্দবাজার: ইংরেজিমাধ্যম স্কুল তৈরির পরিকল্পনা আছে কী?
শঙ্কর: পুরসভার পক্ষ থেকে ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমের কয়েকটি প্রাথমিক স্কুল তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে।
আনন্দবাজার: আধুনিক টাউন হল (অডিটোরিয়াম) তৈরি হলেও সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সে ভাবে হয় না।
শঙ্কর: ২০ এপ্রিল পুরসভার প্রতিষ্ঠা দিবস। ওই দিনটিকে কেন্দ্র করে এলাকার সাংস্কৃতিক সংগঠন, নাট্যদল, স্কুল কর্তৃপক্ষ সকলকে আমন্ত্রণ করে টাউন হলে এক বছর ধরে পর্যায়ক্রমে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে। যে সব ছোট সংগঠন টাকার অভাবে টাউন হলে অনুষ্ঠান করতে পারে না, তাদের জন্য টাউন হল বিনামূল্যে দেওয়া হবে।
আনন্দবাজার: ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার করার পরিকল্পনা আছে কি?
শঙ্কর: পুরসভার নিজস্ব জমি আছে। সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার, ফুড প্রসেসিং ইউনিট, বৃদ্ধাশ্রম, প্যাথলজি সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা আছে আমাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy