নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন। ছবি: সুজিত দুয়ারি
এলাকার মানুষকে প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ করে দিতে গোবরডাঙার গৈপুরে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু হল। বুধবার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উদ্বোধন করেন পুরপ্রধান শঙ্কর দত্ত। দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহযোগিতায় গোবরডাঙা পুরসভা স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিচালনা করবে।
শঙ্কর বলেন, ‘‘নতুন স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি এলাকার মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’’ পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক-নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকবেন। আপাতত পুরুষ ও মহিলাদের জন্য ১০টি করে ২০টি শয্যা থাকছে। তবে আশঙ্কাজনক রোগীর চিকিৎসা এখানে হবে না। চিকিৎসা পরিষেবা পেতে রোগী-প্রতি ১০ টাকা করে দিতে হবে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু হওয়ার পরে বাসিন্দারা নতুন করে গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতাল চালুর দাবি তুলেছেন। কিছু দিন কয়েক আগে গ্রামীণ হাসপাতালের বহির্বিভাগটিও অবশ্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এলাকার মানুষ হাসপাতালে থেকে যে সামান্য পরিষেবা পেতেন, তা-ও আর পাচ্ছেন না।
২০১৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ। তার আগে হাসপাতালে রোগীদের জন্য শয্যা ছিল। ছোটখাটো অস্ত্রোপচার হত। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা থাকতেন। গ্রামীণ হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল হিসাবে তৈরির দাবিতে দলমত নির্বিশেষে এলাকার মানুষ আন্দোলন করছেন অনেক দিন ধরে। যদিও দাবি এখনও পূরণ হয়নি।
বুধবারও গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতাল চালু এবং পূর্ণাঙ্গ স্টেট জেনারেল হাসপাতাল হিসাবে চালুর দাবিতে গোবরডাঙা স্টেশন-সংলগ্ন এলাকায় সিপিএমের পক্ষ থেকে পথসভা করা হয়।
গোবরডাঙা হাসপাতাল বাঁচাও কমিটির পক্ষ থেকে সংগঠনের আহ্বায়ক তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান বাপি ভট্টাচার্য জানান, গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালের উপরে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ মানুষ নির্ভরশীল ছিলেন। সেখান থেকে এখন মানুষ কোনও পরিষেবা পাচ্ছেন না। করোনা পরিস্থিতির সময়ে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে এটি চালু করা হয়েছিল। সে সময়ে মানুষ ভেবেছিলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে স্টেট জেনারেল হাসপাতাল তা চালু করবে রাজ্য সরকার। তা হয়নি। বাপির কথায়, ‘‘স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে দিয়ে হাসপাতাল চালু করা হচ্ছে। কিন্তু এটি সরকারি হাসপাতাল নয়। এতে মানুষের বিশেষ কোনও সুবিধা হবে না।’’ তিনি জানান, বিধানসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল চালুর বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও তা পূরণ করা হল না।
গ্রামীণ হাসপাতালটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল হিসাবে ঘোষণার দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছে গোবরডাঙা পৌর উন্নয়ন পরিষদও। পরিষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে একটি শিশু হাসপাতাল ১৯৭১ সালে চালু হয়েছিল। কিছু সরকারি সাহায্য পেত তারা। পরে বন্ধ হয়ে যায়। পরিষদের সহ সভাপতি পবিত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দু’টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাহায্যে পুরসভা ফের ওই হাসপাতাল চালু করেছে। কিন্তু পরিষেবা পেতে হলে টাকা খরচ করতে হবে। এই বিষয়টি আমরা সমর্থন বা অসমর্থন করছি না। আমাদের দাবি, গোবরডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালটিকে স্টেট জেনারেল হাসপাতাল হিসাবে ফের চালু করা হোক।’’
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। শীঘ্রই হাসপাতালটি চালু করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy