পুকুর কাটতে গিয়ে প্রাচীন প্রত্নস্থলের খোঁজ মিলল রায়দিঘিতে। মণিনদীর পশ্চিম পাড়ে মধ্য কুমড়োপাড়ার ওই পুকুর থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু প্রত্নসামগ্রী।
গবেষকদের অনুমান, সেগুলি কুষাণ ও গুপ্ত যুগের সমসাময়িক। স্থানীয় গবেষক রণজিৎ দেবনাথ সামগ্রীগুলি উদ্ধারের পরে সুন্দরবন প্রত্ন গবেষণা কেন্দ্রে রাখার ব্যবস্থা করেছেন। উদ্ধার হওয়া একটি পশুর চোয়াল পরীক্ষা করার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করেছেন তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি কুমড়োপাড়া এলাকায় এক ব্যক্তির পুকুরের জল তুলে নতুন করে সংস্কার চলছিল। প্রায় আট ফুট মাটি কাটার পরে পোড়ামাটির বিভিন্ন সামগ্রী উঠে আসতে থাকে। জানতে পেরে হাজির হন সুন্দরবনের তরুণ গবেষক রণজিৎ। পুকুর থেকে পাওয়া যায় বিভিন্ন দাঁত, শিং ও হাড়। এর মধ্যে বাইসনের হাড় থাকারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। এ ছাড়াও পাওয়া গিয়েছে পোড়ামাটির হাঁড়ি, সরা, টেরাকোটার বল, বিভিন্ন ইট ও পিলসুজ। রণজিৎ বলেন, ‘‘একটি বসতির প্রত্নাবশেষ পাওয়া গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, ভূমিকম্প বা কোনও দুর্যোগে ওই সভ্যতা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে এখনও প্রচুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও উৎখনন প্রয়োজন।’’ আগে রায়দিঘির মণিনদীর পূর্ব পাড়ে জটা এলাকায় প্রত্নস্থলের খোঁজ মিলেছিল। এ বার নদীর পশ্চিমপাড়ে কুমড়োপাড়াতেও প্রাচীন সামগ্রী মিলল। সুন্দরবন প্রত্ন গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ দেবীশঙ্কর মিদ্যা বলেন, ‘‘এই এলাকা থেকে আগেও মধ্য ও গুপ্তযুগের বিভিন্ন সমগ্রী পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতার অভাবে বহু সামগ্রী নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ বার আরও সামগ্রী উদ্ধার হওয়ায় সুন্দরবন গবেষণায় নতুন দিগন্ত খুলে যেতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)