কোমরে, পায়ে শিকল বাঁধা। কয়েদির পোশাক পরা। ঘিরে নিয়ে যাচ্ছে আমেরিকার পুলিশ। তার পরই তুলে দেওয়া হয় ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র আধিকারিকদের হাতে। ২৬/১১ মুম্বই হামলার চক্রী তাহাউর রানাকে এনআইএ এবং বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়ার সেই ছবি প্রথম প্রকাশ করল আমেরিকা। সে দেশের বিচার দফতর এই ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিতে দেখে মনে করা হচ্ছে, আমেরিকার কোনও সেনাঘাঁটিতে এই প্রত্যর্পণ হয়েছে। তবে জায়গাটি কোথায় সেটি গোপন রেখেছে আমেরিকা।
বৃহস্পতিবারই রানাকে আমেরিকা থেকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়েছে বিশেষ বিমানে। দিল্লিতে নামার পর তাঁকে গ্রেফতার করে এনআইএ। তার পর তাঁকে বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়। রানার ১৮ দিনের এনআইএ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দিল্লির পালম বিমানবন্দরে নামে বিশেষ বিমান। সাদা চুল, মুখভর্তি দাড়ি, বাদামিরঙা একটি আলখাল্লার মতো পোশাকে তাঁকে দিল্লির বিমানবন্দরে দেখা গিয়েছে।
রানাকে জেরার জন্য ১২ জনের একটি দল গঠন করেছে এনআইএ। সেই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন ডিআইজি জয়া রায়। রানার প্রত্যর্পণে এই পুলিশ আধিকারিকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দিল্লিতে নিয়ে আসার পর রানাকে এনআইএ-র সদর দফতরে উচ্চ নিরাপত্তার সেলে সর্ব ক্ষণের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। খাবার-সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে এনআইএ-র দফতর থেকেই। ১৮ দিনের হেফাজত শেষে রানার ঠিকানা হতে পারে তিহাড় জেল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ রানাকে নিয়ে দিল্লি বিমানবন্দরে নামেন এনআইএ আধিকারিকেরা। বুধবার আমেরিকায় ‘জি৫৫০ জেট’ নামের বিশেষ বিমানে তোলা হয়েছিল রানাকে। আমেরিকা থেকে ভারতে আসার পথে বিমানটি বুধবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ অবতরণ করেছিল রোমানিয়ার বুখারেস্টে। সেখানে ১১ ঘণ্টা দাঁড়ানোর পর বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে বিমানটি ভারতের উদ্দেশে রওনা দেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রানাকে নিয়ে বিমানটি দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
রানাকে ভারতে ফেরানোর পরে একটি বিবৃতি দিয়ে এনআইএ জানিয়েছে, ২০০৮ সালের ওই জঙ্গি হানার মূল ষড়যন্ত্রী ছিলেন রানা! বিবৃতিতে এনআইএ জানিয়েছে, “২৬/১১ মুম্বই জঙ্গি হানার মূলচক্রী তাহাউর হুসেন রানাকে বৃহস্পতিবার ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ২০০৮ সালের ওই ঘটনায় মূল ষড়যন্ত্রীকে বিচারের আওতায় আনার জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে চেষ্টা চলছিল।”